• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
আগেও সেই নারীকে দুবার ধর্ষণ করে দেলোয়ার

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

আগেও সেই নারীকে দুবার ধর্ষণ করে দেলোয়ার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ অক্টোবর ২০২০

নোয়াখালীতে নির্যাতনের শিকার সেই নারীকে বছরখানেক আগেও দুবার ধর্ষণ করেছিল দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার । ভুক্তভোগী ওই নারী রাতের বেলায় তখন বাবার বাড়িতে একা ছিল। দেলোয়ারের সঙ্গে আরেক আসামি কালামও তাকে ধর্ষণ করেছে। এদিকে মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি দেলোয়ারসহ ৬ জনকে রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। 

মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত পরিচালক মাহমুদ ফায়জুল কবির গতকাল মঙ্গলবার ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি দাবি করেন, দেলোয়ার ভুক্তভোগী ওই নারীকে রাতের বেলায় নৌকায় নিয়েও ধর্ষণ করেন। দেলোয়ার এলাকায় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাননি তিনি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তদল গতকাল মঙ্গলবার নোয়াখালীতে এসে ঘটনাস্থল বেগমগঞ্জ উপজেলা ও ভুক্তভোগী নারী ও তার বাবার সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া তদন্ত দল জেলা পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলে ভিকটিম ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।

এদিকে দেলোয়ারের অস্ত্র মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা খাতুনের আদালতে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, বাংলাদেশের বহুল আলোচিত-সমালোচিত বেগমগঞ্জের নারী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার বাহিনীর প্রধানকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অস্ত্র মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে। আদালত শুনানি শেষে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। এই মামলাটি যাতে দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত রোববার রাতে র্যাবের একটি দল সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে অস্ত্রসহ নারী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে বেগমগঞ্জে তার মাছের খামারে আরো বিস্ফোরক ও গুলি রয়েছে। পরে র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্প কমান্ডারের নেতৃত্বে একটি দল মাছের খামারে অভিযান চালিয়ে ৭টি তাজা ককটেল ও দুটি বন্দুকের কার্তুজ উদ্ধার করে। বিস্ফোরক ও গুলি উদ্ধার ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে র্যাব।

সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আসামি দেলোয়ার হোসেনকে হস্তান্তর করে। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় একজন র্যাবের ডিএডি বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার নুর হোসেন বাদল ও ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাসফিকুল হক এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডপ্রাদের মধ্যে বাদলের সাতদিন ও সোহগের দুদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রধান আসামি নুর হোসেন বাদলকে পৃথক দুটি মামলায় ২০ দিন এবং মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগের সাতদিন রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক বাদলের সাতদিন ও সোহাগের দুদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এর আগে সোমবার বিকেলে একই আদালত এ মামলায় গ্রেপ্তার মো. আব্দুর রহিম ও রহমত উল্লাহর তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের বিবস্ত্র করে এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করলে পুরো দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মামলার সন্দেহভাজন আসামি স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে অস্ত্রসহ এবং তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির গলি থেকে নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের একটি আভিযানিক দল।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার একলাশপুর ইউনিয়নের খালপাড় এলাকায় ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও আব্দুর রহিমসহ ৫ বখাটে তরুণ। ঘটনার ৩২ দিন পর গত ৪ অক্টোবর (রোববার) দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads