• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

এবার কিশোরগ্যাং মদতদাতাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে পুলিশ

সালাম না দেওয়ায় কুপিয়ে খুন করা হয় হাসানকে

  • ইমরান আলী
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

রাজধানীজুড়ে আবারো কিশোরগ্যাংয়ের তৎপরতা বাড়ছে। তাদের তৎপরতা বন্ধে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সচেতনতা তৈরির চেষ্টাও চলছে। কিশোরগ্যাংয়ের পেছনে রাজনৈতিক দলের নেতা বা বড় ভাই থাকলেও তাদেরও আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, লকডাউনের সময় বা তার আগে এসব গ্যাংয়ের তৎপরতা কমিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আবারো বাড়ছে। বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা কিশোরদের সঠিকপথে আনার জন্য আমরা কাজ করছি।

রাজধানীর মুগদায় কিশোরগ্যাংয়ের হাতে খুন হয় হাসান। তার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার নিয়ে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম কিশোরগ্যাংয়ের তৎপরতার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, রাজধানীতে কিশোরগ্যাংয়ের তৎপরতা কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ এ তৎপরতা আবারো বাড়ছে। দক্ষিণখানের এ হত্যার মধ্যে দিয়ে এটি ছড়িয়ে পড়ে। কামরাঙ্গীচরের পর সবশেষ খুন হয় মুগদায়। তারমতে, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোররা বিপজ্জনক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। খুন করে ফেলছে। এটা খুবই বিপজ্জনক। এজন্য বিট পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বিট পুলিশিংয়ের প্রধান দুটি বিষয়ে জোর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি, মাদক আর আরেকটি কিশোর অপরাধ।

মাহবুব আলম বলেন, কিশোরদের অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতনতার জন্য বার বার বলা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা জড়িয়ে পড়ার পেছনে কেউ যদি মদত দিয়ে থাকেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। অর্থাৎ নেপথ্যে রাজনৈতিক দলের নেতা থাকলেও ছাড় দেওয়া হবেনা।  

সালাম না দেওয়ায় হাসান খুন : গত শুক্রবার সিনিয়রদের সালাম না দেওয়ার মুগদায় মো. হাসান (১৬) নামের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। আটকৃতরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের নাম প্রকাশ করেনি গোয়েন্দা পুলিশ।

যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, ছোট ভাই, বড় ভাইকে সালাম না দেওয়ায় ছুরিকাঘাত করে কিশোর হাসানকে হত্যা করে কিশোরগ্যাং গ্রুপের অপর সদস্যরা। ওই গ্যাংয়ের নেতৃত্বে ছিল তানভীর। তার সঙ্গে আরো সাত-আটজন জড়িত। সেইসাথে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বও ছিল। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা তানভীরসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিহত হাসানের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ভারারা গ্রামে। সে পরিবারের সঙ্গে মান্ডায় ভান্ডার সাবেদ আলীর ভাড়া বাসায় থাকত। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তৃতীয় হাসান একটি প্রিন্টিং প্রেসের কর্মচারী হিসেবে কাজ করত। নিহতের বড় ভাই হাবিব অভিযোগ করেন, হাসানকে মান্ডার গলিতে সাত-আটজন মিলে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছুরিকাঘাতে আহত বেলাল জানায়, হাসানরা জুনিয়র হওয়ার পরও তাকে সাত-আটজন আহত করেছে।’

উত্তরখানে সোহাগ হত্যা : রাজধানীর উত্তরখানে কিশোরগ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে মো. সোহাগ নামে এক কলেজছাত্র খুন হয়। রিকশাচালককে মারধরের প্রতিবাদ করায় রাজাবাড়ী খ্রিস্টানপাড়ায় উত্তরা পাবলিক কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থীকে হত্যা করে স্থানীয় বখাটেরা। সোহাগ উত্তরখান ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই মো. সোলাইমান বাদী হয়ে কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান হূদয়কে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ কিশোরগ্যাংয়ের ৪ সদস্যকে আটক করেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads