• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
হুমকি মুখে আওয়ামী লীগ নেত্রী শিরিন শান্তির জীবন

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

হুমকি মুখে আওয়ামী লীগ নেত্রী শিরিন শান্তির জীবন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ জুলাই ২০২১

ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিরিন শান্তির জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবারের সদস্যদের নানা হুমকির প্রেক্ষিতে এক সময়ের ডাকসাইটে এ নেত্রী এখন প্রায় ঘরবন্দি জীবন যাপন করছেন। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করলেও সুরাহা হয়নি। এমনকি স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লারাও কোন কথা শুনছে না তার পরিবার।

জানা যায়, পল্লবীর সেকশন ১২ এর ধ ব্লকে শিরিন শান্তির নামের একটি বাড়ী রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এখানেই বসবাস করে থাকেন। আর সেই বাড়িটি বিক্রির জন্য নানা কৌশল করছেন স্বামী ওয়াজ উদ্দীন। বাড়ীটি শান্তির নামে হলেও ওয়াজউদ্দিন, ছেলে সৈকত, মেয়ে মুক্তা আর মেয়ের জামাই শামীম ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। আর বায়না হিসেবে নিয়েছেন ৩০ লাখ। শিরিন শান্তি বাড়িটি বিক্রি করবেন না। মূলত এ বিষয় নিয়েই পারিবারিকভাবে বিরোধ লাগে। আর এই বিরোধের জেরেই জীবন বিপন্ন হওয়ার পথে তার। বসিলা থেকে আব্দুল্লাপুরে চলাচলকারী পরিস্থান পরিবহনের চেয়ারম্যান হিসেবেও রয়েছেন শিরিন শান্তি।

জানা যায়, গত ১১ জুলাই শিরিন শান্তিকে বাড়ী বিক্রির জন্য উপর্যুপুরি চাপ প্রয়োগ থাকে স্বামী, ছেলে আর মেয়ের জামাই। এতে করে তিনি পল্লবী থানায় অভিযোগ করতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে স্বামী ওয়াজ উদ্দিন, সৈকত ও শামীম থানায় উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে থানাতেই তারা হুমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় এমপি ইলিয়াস উদ্দীন মোল্লা তার বাসায় ডাকেন এবং পরে বিষয়টি নিয়ে বসা হবে বলে আশ^াস দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপরও বাড়িটি লিখে দিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে তারা। এমনকি বাড়ি থেকে বের পর্যন্ত হতে পারছেন না।

স্থানীয়রা জানান, শিরিন শান্তির ছেলে সৈকত, মেয়ের জামাই শামিম ও মেয়ে মুক্তা তারা সবাই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশেষ করে শামিম ও সৈকত তাদের সহযোগী তৈরী করে মাদক ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। মিরপুর ৬ চলন্তিকা মোড় এলাকায় মোটরসাইকেল শো-রুমের আড়ালে গড়ে তোলেছেন মাদকের সিন্ডিকেট। একটি তিনতলা বাসার চারিদিকে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তারা এটি নিয়ন্ত্রন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সৈকত কিছুদিন আগে ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। পরে জামিনে বেরিয়ে এসেও তিনি আবারও মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের এক ঘনিষ্ঠ আত্নীয় বলেন, শান্তির স্বামী ওয়াজউদ্দিন একসময় গুলিস্তান রুটে বাসের হেল্পার থেকে ড্রাইভারি কাজ করে। এর আগে রাস্তায় রাস্তায় কাগজ কুড়ানোর কাজও করতো। স্বামীকে প্রতিষ্ঠিত করতে শান্তি নিজে চেয়ারম্যান পদ নিয়ে পরিস্থান পরিবহন নামে কোম্পানি করে। শান্তির নামে ব্যাবসা থাকলেও ওয়াজ উদ্দিন তার ছোট ছেলে ও মেয়ের জামাইয়ের পুরো ব্যবসা দখল করে চালিয়ে আসছে।

শিরিন শান্তি অভিযোগ করে বলেন, স্বামী সন্তানের জন্য আমি জীবনে কি না করেছি। এখন আমার নামে থাকা বাড়িটি তারা বিক্রি করার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এমনকি দলিলে স্বাক্ষর না করলে আমাকে মেরেও ফেলবে বলছে।

তিনি বলেন, তার স্বামীর অন্য জায়গাও রয়েছে। সেগুলো বিক্রি করলে কোন ক্ষতি হবে না। আমার নামে থাকা একমাত্র বাড়িটি কেন বিক্রি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি পরিস্থান পরিবহণের চেয়ারম্যান। অথচ তারা আমার ব্যবসা দখল করেছে। সবাই এখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ছেলে সৈকত ও মেয়ের জামাই এরা এখন মাদক ব্যবসায়ী। তারা সন্ত্রাসীদের আমাকে খুন করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। মামুন জামিলের ভয় দেখায়। আমি এক প্রকার ঘরে বন্দি। কারও সঙ্গে ঠিকমত যোগাযোগও করতে দেয়না। আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগীতা চাচ্ছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads