• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা

ঘাতক স্বামী ইমন

অপরাধ

শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা

  • শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ ডিসেম্বর ২০২১

পারিবারিক কলহের জেরে বেশ কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়িতে রেখে আসা হয়েছিল স্ত্রীকে। পরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে কয়েকবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে গেলে আসতে অস্বীকৃতি জানায় স্ত্রী। এ নিয়ে ফের বাকবিতণ্ডা বাঁধে স্বামী স্ত্রীর মাঝে। পরে স্ত্রীর সাথে দেখা করতে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় স্বামী। রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়লে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে দেয় স্বামী। সকালে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে লাশ রেখে স্বামী পালিয়ে যায়।

এমন‌ই পাশবিক এক হত্যার ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের বড়বেড় গ্রামে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। বিকাল ৪ টায় এ রির্পোট লেখা পর্যস্ত ঘাতঘ স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।

অভিযুক্ত স্বামীর নাম ইমন হোসেন (২২)। সে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে। ঘটনার পর থেকে ইমনের বাড়ির সকল লোকজন পালিয়ে রয়েছে।

নিহত গৃহবধু মারুফা আক্তার (১৬) কাপাসিয়ার উপজেলার বড়বেড় গ্রামের মাসুদ রানার মেয়ে। নিহত মারুফা নানার বাড়ি থেকে বরমী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সেখানে থাকার সুবাধেই ইমনের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। পরে সে প্রেমের সর্ম্পকের জন্য পারিবারিক ভাবে ইমন ও মারুফার বিয়ে দেওয়া হয় বলে স্বজনরা জানায়।

নিহতের স্বজনরা জানান, শ্রীপুর কাপাসিয়া উপজেলার সীমান্ত বিভক্ত করা নদী বানার। পুর্ব পাশে কাপাসিয়া আর পশ্চিম পাশে শ্রীপুর উপজেলা। মারুফা পাশের শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামে নানার বাড়ীতে থেকে বরমী বাজার উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সে সুবাধে সে গ্রামের ইমনের সঙ্গে মারুফার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ প্রেমের সর্ম্পক ধরে নয় মাস আগে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই ইমন বেকার থাকায় তার মা বাবা মারুফাসহ ইমনকে নানা ভাবে কাজের জন্য চাপ দিত। এর জের ধরেই কয়দিন আগে মারুফার সঙ্গে তার শ্বাশুড়ীর বাকবিত-া বাঁধে। এ সময় স্বামী ইমনের সঙ্গে কলহ বাঁধে। পরে বাপের বাড়ি চলে আসে মারুফা। বেশ কিছু দিন পর স্বামী ইমন স্ত্রী মারুফার সঙ্গে দেখা করতে মারুফাদের বাড়ি আসে শুক্রবার। পরে রাতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত স্কুল ছাত্রী মারুফার বাবা মাসুদ রানা অভিযোগ করে বলেন, ইমন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। পরে রাতের খাবার খেয়ে তারা একটি ঘরে ঘুমাতে যায়। পরে রাতে কোনো এক সময় আমার মেয়েকে গলাটিপে হত্যার করেছে ইমন। পরে ঘরের আড়ার সাথে উড়না বেঁধে আত্মহত্যার করেছে বলে ইমন জানিয়ে কৌশলে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন তাদের সুখি করতেই তাদের প্রেম মেনে নিয়ে বিয়ে দিয়ে আমার মেয়েকে হারালাম। তিনি বলেন ইমন ফোনে জানিয়েছে আমার মেয়ে তার সঙ্গে যেতে রাজি না হওয়াতে সে মারুফাকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।

নিহতের নানী হালিমা বেগম জানান, ইমন বেকার জেনেও তাদের সর্ম্পকের কথা মেনে বিয়ে দিলাম। আমাদের বাড়িতে থেকে আমার নাতনী পড়ত। তিনি বিলাপ করে বলতে থাকেন আমাদের অত আদরের নাতনীডারে মাইরা ফালছে পাষন্ডডা। কই গেল তাদের অত প্রেম মহাব্বত। হেই পাষন্ড ইমনের বিচার চাই, ফাঁসি চাই।

কাপাসিয়া থানার ওসি এম নাসিম আহমেদ ঘটনার সত্যাতা নিশ্চিত করে জানান, গৃহবধু হত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতল মর্গে লাশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কাজ করছে খুব দ্রুতই পালাত ইমনকে গ্রেফতার করবে পুলিশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads