• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
দেশেই নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ পরিশোধনাগার

সংগৃহীত ছবি

ব্যবসার খবর

দেশেই নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ পরিশোধনাগার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশেই নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ পরিশোধনাগার। এর ফলে স্বর্ণের আন্তর্জাতিক বাজারের অংশীদার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্মুক্ত হচ্ছে অপরিশোধিত স্বর্ণ এনে পরিশোধন করে বার বা কয়েন তৈরির পথ। এজন্য নীতিমালাও সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার।

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে স্বর্ণের বার আমদানি করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। আর সেসব স্বর্ণ থেকে তৈরি অলংকার শুধু দেশেই বিক্রি করতে পারতেন তারা। ২০১৮ সালে স্বর্ণ নীতিমালায় তৈরি হয় স্বর্ণ রপ্তানির সুযোগও। এবার দেশেই স্বর্ণ পরিশোধন করে বার ও কয়েন রপ্তানির লক্ষ্যে সেই নীতিমালা সংশোধন করছে সরকার। আকরিক এনে বার ও কয়েন তৈরি করে সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ। আর এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী দেশের ব্যবসায়ীরা।

সংশোধিত নীতিমালা অনুমোদনের জন্য দ্রুতই উঠছে মন্ত্রিসভায়। সে লক্ষ্যে ২৭ জানুয়ারি দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অপরিশোধিত স্বর্ণ আমদানি ও স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপনের সুযোগ রেখে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ (সংশোধিত)’-তে নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এই অনুমোদনের ফলে ব্যবসায়ীরা স্বর্ণের বার ও স্বর্ণের অলংকার আমদানির পাশাপাশি অপরিশোধিত স্বর্ণও আমদানি করতে পারবেন।

দেশের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রপ্তানির উদ্দেশে স্বর্ণের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করা, স্বর্ণ আমদানি ও পরবর্তী বাণিজ্যিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, স্বর্ণের অলংকার রপ্তানিতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া, বিদ্যমান শুল্ক/বন্ড সুবিধা যৌক্তিক ও সহজ করা, ভোক্তা বা ক্রেতা ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীসহ খাত সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সংরক্ষণ, অংশীদারিত্ব ও কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই খাতের সুষ্ঠু ও টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরির উদ্দেশে এই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এ উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালের ১৭ মে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করা হলে ২৩ মে অনুষ্ঠিত সভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের মাধ্যমে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ কার্যকর হয়।

সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিশোধনাগার করার অনুমতি নিতে হলে কোম্পানির ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকতে হবে। অনুমোদন পেলে উৎপাদন শুরু আগে চলতি মূলধন থাকতে হবে ৫০০ কোটি টাকা। পরিশোধনাগার করতে হবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৭ কিলোমিটারের মধ্যে ২০ বিঘা জমিতে। এছাড়াও আকরিক আমদানিতে এমন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে, যার ১০০ টনের মজুদ ও বার্ষিক ১০ টন সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নিতে হবে ব্যবস্থা আর তদারকি করবে কারিগরি কমিটি। উৎপাদিত স্বর্ণের বার ও কয়েনে থাকবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী বিশেষ সিল।

পরিশোধনাগার অনুমোদনের ৩ বছরের পর চলতি মূলধন ও উৎপাদন ক্ষমতার ৭০ শতাংশের নিচে নামলে কোম্পানির লাইসেন্স স্থগিত করতে পারবে সরকার। পাশাপাশি পরিবেশ, আমদানি-রপ্তানি ও বার নিয়ন্ত্রণের শর্ত অমান্য হলে স্থগিত হবে লাইসেন্স। অন্তত ২০ বছর এখাতে দেশিও বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেবে সরকার।

এদিকে স্বর্ণ নীতিমালা হওয়ার পর ১৯টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে স্বর্ণ আমদানি করার অনুমতি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়াল বলেন, স্বর্ণ পরিশোধনাগার করতে নীতিগত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে স্বর্ণ শোধনাগার হলে আমাদের সুবিধা হবে, অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থান বাড়বে। এলসি সমস্যা তখন আর আমাদের এলসি করা লাগবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে মালামাল পাব। শিপমেন্টের সময় বেঁচে যাবে।

স্বর্ণ পরিশোধনাগার করতে কয়টি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে দুটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। একটি ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড অন্যটি বসুন্ধরা গ্রুপ।

তিনি আরো জানান, অনুমোদনের পর দুটি প্রতিষ্ঠান ২৫ কেজি স্বর্ণ আমদানি করেছে। প্রথমে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড পরে অ্যারোসা গোল্ড স্বর্ণ আমদানি করেছে। দুটি প্রতিষ্ঠান মিলে ২৫ কেজি স্বর্ণ আমদানি করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জটিলতার কারণে আর কেউ স্বর্ণ আমদানি করতে পারেনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads