• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সম্পূর্ণ অনৈতিক

প্রতীকী ছবি

ব্যবসার খবর

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সম্পূর্ণ অনৈতিক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ মে ২০২১

শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়াকে নীতি ও সাম্যের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। গতকাল এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় বক্তারা আরো বলেন, এ সুযোগ দীর্ঘ মেয়াদে হতে পারে না।

‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ : পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কী থাকছে’ শিরোনামের ভার্চুয়াল এই সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময় বাজেটে শেয়ারবাজার, জমি-ফ্ল্যাট ও ব্যাংকের মতো অনুৎপাদনশীল খাতে ঢালাওভাবে কেন কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, যদি অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা সাদা করার সুযোগই দেওয়া হয়, সেটি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে কেন নয় সেটিও জানতে চেয়েছেন তারা।

সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালের সভাপতিত্বের অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরেক সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ ইব্রাহীমসহ অনেকে। সভায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করে দেবপ্রিয় বলেন, সৎ করদাতার সঙ্গে এটি অন্যায় আচরণ। সংবিধানে সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা থাকলেও সেটিও ভঙ্গ হচ্ছে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অর্থনীতির নীতির পরিপন্থী, সাম্যের পরিপন্থী। তার মতে, যে তিনটি খাতে কালোটাকা সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে নতুন কিছু উৎপাদন হয় না। অনুৎপাদনশীল খাতেই এটি বিনিয়োগ হচ্ছে। ৫০ বছরের বাংলাদেশে একটি শ্রেণির জন্য এই সুযোগ কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার মানে হলো করের অন্যায্যতা। করের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি।

অ্যাপেক্সের এমডি নাসিম মঞ্জুর কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়াকে পুরোপুরি অনৈতিক উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছি, আমরা ৩০ শতাংশ হারে কর দিচ্ছি। আর যারা কালোটাকা সাদা করছেন, তারা ১০ শতাংশ কর দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। সৎ করদাতাদের কাছে এটি একটি ভুল বার্তা যাচ্ছে।’ বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ ইব্রাহীম বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দীর্ঘ মেয়াদে কোনো পরিকল্পনা হতে পারে না। রাজস্ব আদায়ের নাম করে এই অনৈতিক সুযোগ বেশি দিন দেওয়া ঠিক হবে না।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনার সময়ে শিশুদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শিশুদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আসছে বাজেটে শিশু বাজেট করার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদ দেন মোস্তাফিজুর রহমান।

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট কেমন হওয়া উচিত সে প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাজেট হওয়া উচিত সম্প্রসারণমূলক। আসছে বাজেটে মানুষের ভোগ ব্যয় বাড়াতে হবে। ভোগ ব্যয় না বাড়লে পুষ্টিহীনতা বাড়বে। দারিদ্র্যের হার আরো বাড়বে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়বে না। সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে নেট রপ্তানি বাড়াতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads