• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

ব্যবসার খবর

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নতুন রেকর্ড

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ মে ২০২১

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ২০২০ থেকে ৩১মার্চ ২০২১) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৮৫ হাজার ৯৯০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। দেশের ইতিহাসে এই সময়ে এত বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির রেকর্ড এটাই প্রথম।

চলতি অর্থবছরে বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেওয়ার টার্গেট নির্ধারণ করেছিল, মাত্র ৯ মাসেই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

সরকার চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছিল। কিন্তু প্রথম ৯ মাসেই সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি হয়েছে ৩৩ হাজার ২০ কোটি টাকার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। গত বছরের জানুয়ারি মাসে এ খাত থেকে সরকারকে দুই হাজার ২৪০ কোটি ১৬ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিল।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুদহার বেশি এবং আমানত নিরাপদ মনে করায় মানুষ এখন সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের দিকে বেশি ঝুঁকছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মার্চ মাসের তথ্য বলছে, বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ৩ থেকে ৬ শতাংশ সুদ বা মুনাফা দিচ্ছে। অন্যদিকে সঞ্চয়পত্রে সুদ মিলছে ১১ শতাংশের বেশি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে নিট বিক্রি বলা হয়। বিক্রির ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। এর বিনিময়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের প্রতি মাসে সুদ দিতে হয়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত মোট ৮৫ হাজার ৯৯০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। সুদ-আসল বাবদ গ্রাহকদের শোধ করা হয়েছে ৫২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা। এ হিসেবে নিট বিক্রির পরিমাণ হচ্ছে ৩৩ হাজার ২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বিশাল ঘাটতি মেটাতে তাই এবার সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে যার লক্ষ্য ছিল ২৭ কোটি টাকা।

জানা গেছে, সঞ্চয়পত্রের বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একইসঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া এখন ব্যাংক হিসাব ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ নেই। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ও ব্যাংকের আমানতের সুদহার কম হওয়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন সাধারণ গ্রাহকরা।

এর আগে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে সর্বশেষ ২০১৫ সালের মে মাসে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার গড়ে ২ শতাংশ করে কমানো হয়েছিল।

বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি

বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ, পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের ২৩ মের পর থেকে এ হার কার্যকর রয়েছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads