• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪২৯
‘অপহরণকারীকে আমার প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছিলাম’

ব্রিটিশ মডেল ক্লোয়ি এইলিং

ছবি : ইন্টারনেট

আনন্দ বিনোদন

‘অপহরণকারীকে আমার প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছিলাম’

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৭ জুলাই ২০১৮

যুক্তরাজ্যের মডেল ক্লোয়ি এইলিংকে ২০১৭ সালে ইটালিতে অপহরণ করে ছয়দিন আটকে রাখা হয়। কিন্তু যখন তিনি মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন, অনেকেই তার বর্ণনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ভিক্টোরিয়া ডার্বিশায়ারকে তিনি বর্ণনা করছিলেন কিভাবে তিনি মুক্তি পেয়েছেন আর কিভাবে তাকে সন্দেহ করা মানুষজনের সঙ্গে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।

বিবিসি জানায়, দুই দিন ধরে একটি সুটকেসের মধ্যে শিকলে আটকে থাকার পর, ক্লোয়ি এইলিং তার অপহরণকারীর সঙ্গে বিছানায় একসঙ্গে শুতে রাজি হন। ক্লোয়ি এইলিং বলেন, 'যতই আমরা কথাবার্তা বলতে শুরু করলাম, যতই আমাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করলো, যখন আমি বুঝতে শুরু করলাম সে আমাকে পছন্দ করছে, তখনি আমি জানতাম, আমাকে এর সুযোগ নিতে হবে।'

দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা বিশ বছরের ক্লোয়ি এইলিং জানান, ফটো শুট করা হবে, লুকায হের্বা নামের একজনের আমন্ত্রণে তিনি ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইটালির মিলান শহরে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাকে মাদক ইনজেকশন দেয়া হয়, কাপড়চোপড় খুলে ফেলা হয় আর হাত বেধে গাড়ির বুটে ভরে প্রত্যন্ত একটি ফার্ম হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়। মিজ এইলিং বলেন, ‘এটা ছিল অত্যন্ত ভীতিকর।’ ওই ফার্ম হাউজে যাওয়ার পর হের্বা নামের তার অপহরণকারী তাকে জানায়, তিন লাখ ইউরো না দেয়া হলে তাকে যৌন দাসী হিসাবে বিক্রি করে দেয়া হবে।

ক্লোয়ি এইলিং বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম, সে যা বলছে, তার সবই সত্যি। তাকে এক সেকেন্ডের জন্যও আমার সন্দেহ হয়নি, কারণ সে আমার প্রতিটি প্রশ্নের খুঁটিনাটি উত্তর দিচ্ছিল।'

কিন্তু সেই অপহরণকারী এটাও জানতে চায় যে, সে মিজ এইলিংকে চুমু খেতে পারে কিনা এবং তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব কিনা। এইলিং বলেন, 'আমি ভাবলাম, এটাই আমার এখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ। যখন আমি তাকে বললাম যে, এটা ভবিষ্যতে হতে পারে, তখন সে খুবই উৎফুল্ল হয়ে যায় এবং সত্যিই ভাবতে শুরু করে যে, এরকম কিছু হতে যাচ্ছে। সে সবসময় এ বিষয়েই কথা বলতে শুরু করে। তার এই আচরণ দেখে আমি বুঝতে পারি, আমাকে বিষয়টি চালিয়ে যেতে হবে।'

যখন সেই অপহরণকারী বুঝতে পারে যে, কোনো মুক্তিপণ পাওয়া যাবে না, তখন সে তাকে ছেড়ে দেয় এবং নিজেই গাড়ি চালিয়ে মিলানে ব্রিটিশ কনস্যুলেটে পৌঁছে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, যখন তারা কনস্যুলেট খোলার অপেক্ষায় একটি ক্যাফেতে বসেছিলেন, তাদের হাসতে আর মজা করতে দেখা গেছে।

এইলিং বলছেন, 'এটা হয়তো অনেকের কাছে অবাক লাগতে পারে। কিন্তু কেন আপনি এমন একজনের সঙ্গে মুখ গোমড়া করে থাকবেন, যার আপনার জন্য আবেগ রয়েছে এবং সেজন্য আপনাকে মুক্তিও দিয়েছে? সে যাতে আমার প্রেমে পড়ে, সেজন্য আমার সবকিছুই করতে হয়েছে।'

এরপরে বিচারে এই জুনে ১৬ বছর নয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছে পোল্যান্ডের নাগরিক হের্বার। আদালত আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে হের্বা বলেছেন, এর আগে এইলিংয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে এবং তিনি তার প্রেমে পড়ে যান। তিনি দাবি করেন, তিনি একটি স্ক্যান্ডাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন যাতে মিজ এইলিং সবার কাছে পরিচিতি পান।

কিন্তু মিজ এইলিং বলেন, ‘আমি এখনো তার উদ্দেশ্যটি বুঝতে পারছি না। শুধুমাত্র টাকার জন্য সে আমাকে অপহরণ করেনি। সে দুই বছর আগে ফেসবুকে আমার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিল। সে যেন অনেকদিন আগে থেকে আমার প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছিল।'

মুক্তির পর যুক্তরাজ্যে ফিরে যখন মিজ এইলিং টেলিভিশন সাংবাদিকদের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন, অনেকে সমালোচনা করেন যে সে সময় তাকে হাশিখুশি দেখাচ্ছিল। তার পোশাক পরিচ্ছদও ছিল তার নিজের পছন্দ মতো।

তিনি বলছেন, বাড়িতে ফিরে আসার আনন্দে তিনি ছিলেন খুবই আনন্দিত, কারণ এটা সত্যি হবে বলে তিনি আশা করেননি। বিমান থেকে নামার সময় তার পরনে ছিল একটি শর্টস আর একটি টপ। ক্লোয়ি এইলিং বলেন, 'আমি আসলে শুধুমাত্র আমার মতোই ছিলাম। আমি সাংবাদিকদের ডেকেছিলাম, কারণ আমার মনে হয়েছিল এরপরে তারা আর আসবে না। কিন্তু সেটা আসলে কাজ করেনি।'

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads