যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে নামকরা এক কবি-গীতিকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরে থাক, উল্টো অভিযোগ আনা গায়িকাকেই বয়কট করল ভারতের দক্ষিণের টেলিভিশন সংগঠন। মোটা টাকা জমা না দিলে, কাজ পাবেন না বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাকে। গত শুক্রবার নিজেই বিষয়টি সবার সামনে এনেছেন তামিল ছবির জনপ্রিয় গায়িকা চিন্ময়ী শ্রীপদা। প্রবীণ কবি ও গীতিকার ভৈরমুথু রামস্বামীর বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এ বছরের শুরুতে দেশজুড়ে ‘#মিটু’ আন্দোলন শুরু হলে, তামিল ছবির জগতেও আলোড়ন পড়ে যায়। সাউথ ইন্ডিয়া সিনে অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টিস্টস অ্যান্ড ডাবিং আর্টিস্টস সংগঠনের সভাপতি রাধারবি ও ভৈরমুথুর বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনেন একাধিক মহিলা। তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন চিন্ময়ী। প্রবীণ ওই গায়কের হাতে নিজের ভয়ঙ্কর অভিযোগের কথাও তুলে ধরেন। তার পরই তাকে বয়কট করে ওই সংগঠন। বলা হয়, সদস্যপদ টিকিয়ে রাখতে ফি জমা দিতে হয় প্রত্যেক শিল্পীকে। টানা দু’বছর সেই বাবদ কোনো টাকা দেননি চিন্ময়ী।
সেই সময়ই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন চিন্ময়ী। গতকাল শনিবার ফের সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন তিনি। জানান, ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিলে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠন। সেই বাবদ দেড় লক্ষ টাকা জমাও দিতে বলা হয়েছে। তাদের কাছে চিন্ময়ীর প্রশ্ন, ‘২০০৬ সাল থেকে কাজ করছি। আমার আয় থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়েছে ওরা। তারপরও টাকা চাইছে। দেড় লাখ টাকা দিলে তবেই নাকি তামিলনাড়ু এবং তামিল ছবিতে কাজ করতে দেবে আমায়। কিন্তু রোজগার তো আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে। তার জন্য আমাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হচ্ছে কেন? ’
টাকার অঙ্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চিন্ময়ী। তার দাবি, ‘নতুন সদস্যপদ নিতে গেলে যেখানে আড়াই হাজার টাকা ফি দিতে হয়, সেখানে আমার কাছে দেড় লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে কোন যুক্তিতে?’
একের পর এক যৌন নিগ্রহের জেরে গত সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ওই সংগঠনের মহিলা সদস্যরা। তাতে মহিলা শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে, হমকি দিতে দেখা যায় তাদের। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সেই সাংবাদিক সম্মেলনের একটি ভিডিও পোস্ট করেন চিন্ময়ী, যাতে ওই সদস্যদের বলতে দেখা যায়, ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে গেলে একটু আধটু এসব সহ্য করতে হয়। তাতে আপত্তি থাকলে দশ বাড়ি কাজ দেখে নেওয়াই ভাল। তাদের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন চিন্ময়ী। তার অভিযোগ, ‘চুপ করিয়ে রাখতে প্রায়শই এই ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।’
