• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
রবীন্দ্রসংগীত চর্চার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

সংগৃহীত ছবি

আনন্দ বিনোদন

রবীন্দ্রসংগীত চর্চার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০২১

বাঙালির সংস্কৃতি সত্তার বাতিঘর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ তার  জন্মদিন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি জাতির দিকনির্দেশক এক আলোকবর্তিকা। বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনের সবকিছুর সঙ্গেই একটু একটু করে মিশে আছে রবীন্দ্রনাথ। গত দেড় শতাব্দী ধরে বাঙালির মানসপটে তার দাপুটে অবস্থান। তাকে বাদ দিয়ে বাঙালির চিন্তার ভূগোল, ভাবের প্রকাশ, রস আস্বাদন কোনো কিছুই সম্ভব না। রবীন্দ্রসংগীতের অমিয় ধারায় নিরলসভাবে নিজেকে সিক্ত করেছেন সংগীতশিল্পী তপন মাহমুদ। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের প্রতিনিধিত্বমূলক জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা। বর্তমানে তিনি সভাপতির দায়িত্বে থেকে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন। তপন মাহমুদ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী পালন-সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সদস্য। প্রায় সাত বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত-বিষয়ক নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘আনন্দলোক’ গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা করছেন।

বর্তমান রবীন্দ্রসংগীত চর্চার নানা দিক নিয়ে তার মুখোমুখি হয়েছিলেন সালেহীন বাবু

-দেশের রবীন্দ্রচর্চা সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?

তপন মাহমুদ :  আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি রবীন্দ্রচর্চা হচ্ছে, বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথের গান প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে এ চর্চা তেমন দৃশ্যমান নয়। আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলো তেমন প্রচার করে না, এটাই দুঃখ। আমাদের সামনে এগোতে হবে এটা ঠিক কিন্তু শেকড়কে ভুলে গেলে চলবে না। রবীন্দ্র, নজরুল, লোকগান নতুন প্রতিভাদের লালন করা উচিত। এ সবকিছুর পৃষ্ঠপোষকতা তেমন হচ্ছে না। রবীন্দ্রসংগীত চর্চার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।

- দীর্ঘদিন ধরে আপনি রবীন্দ্রসংগীত চর্চা করে আসছেন। তখন আর এখনকার রবীন্দ্রসংগীত চর্চা মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখছেন কী?

তপন মাহমুদ : আমি যখন বরিশাল ব্রজমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৫৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকে গান করি। সে সময় রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেছি। মূলত সেখান থেকে আমার গানের জগতে পথচলা শুরু। বরিশালে প্রয়াত নারায়ণ চন্দ্র সাহা, ঢাকায় প্রয়াত ফজলে নিজামী ও মুক্তিযুদ্ধকালে কলকাতায় প্রয়াত অরবিন্দ বিশ্বাসের কাছে রবীন্দ্রসংগীতের তালিম নিয়েছি। তাদের কাছ থেকে যেমন শিক্ষা পেয়েছি। তা আমার গানের পথচলাকে আরো মসৃণ দিয়েছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি যখন গান করতাম তখনকার সময় রবীন্দ্র চর্চা তেমন একটা অনুকূল পরিবেশ ছিল না। তারপরেও আমার চর্চা থেমে ছিল না। রবীন্দ্র গানের চর্চার ক্ষেত্রে এখন অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বছর বছর অনেক শিল্পী তৈরি হচ্ছে। এটা ভালো দিক। আর একটা দিক আমার কাছে ভালো বাড়িতে না হোক নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়িতে একটা হলেও রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম থাকে।

- চর্চার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলছেন কি না এখনকার শিল্পীরা?

তপন মাহমুদ : বড় আকারের রবীন্দ্রসংগীতের চর্চা হচ্ছে এটাই তো আজকের দিনে বড় কথা। একটা সময় ছিল এ দেশে রবীন্দ্র গান বা রবীন্দ্র উৎসব পালন করতে দেওয়া হতো না। এখন তো সেই পরিবেশ নেই। তাই রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার যেমন কণ্ঠ তৈরি হচ্ছে, তেমনি শোনার জন্য কানও তৈরি হচ্ছে। রবীন্দ্রসংগীতকে ঘিরে প্রায় সারা বছরই কোনো না কোনো উৎসব লেগেই আছে। চর্চা বেড়েছে বলে তো শিল্পী তৈরি হচ্ছে।  অনেকেই নিয়ম মেনে রবীন্দ্র গানের চর্চা করছেন। তবে রবীন্দ্রনাথের প্রথা মেনে কতটা শিখছেন বা চর্চা তা ভেবে দেখা দরকার।

- আপনি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার বর্তমান সভাপতি। সংগঠনের কর্মকাণ্ড কেমন চলছে?

তপন মাহমুদ : সন্তান জন্ম দিয়ে পিতা হিসেবে তার যেমন দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে, আমিও তেমন পিতা হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করেছি সংগঠনটিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে। সন্তান বড় হয়েছে, এটা খুব আনন্দের যে এতদিন সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে পারছি। আমার ভেতরে এক অনির্বচনীয় আনন্দ কাজ করছে।

- রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে আপনার পরিকল্পনার কথা বলুন।

তপন মাহমুদ : রবীন্দ্রনাথ নিয়েই তো আমার কাজ। নতুনদের কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীতের সিডি বের করার প্রচেষ্টা আছে। আজ যে নবীন, ৩০-৩৫ বছর পরে সে বয়স্ক হবে। কাজেই এ গানকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে লালন করতে শিখবে। রবীন্দ্রসংগীতের ভিডিও করে ডিভিডি আকারে বাজারজাত ও বিভিন্ন চ্যানেলে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads