সবাই মিলে দেশটাকে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দিনবদলের যে সূচনা আমরা করেছিলাম, সেই দিনবদল হচ্ছে। এটাকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বহুল আলোচিত সংলাপের শুরুতেই আওয়ামী লীগের ১০ বছরের শাসনকালের মূল্যায়ন করে দেখতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এটার বিচার আপনাদের ওপরই ছেড়ে দেব। ক্ষমতা গ্রহণের পর ৯ বছর ১০ মাস হতে চলল আমরা সরকারে। এই সময়ের মধ্যে দেশের কতটুকু উন্নয়ন করতে পেরেছি, সেটা নিশ্চয় আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে উপস্থিত ফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কক্ষে ঢুকে প্রথমে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তার সূচনা বক্তব্যের পর গণভবনে রুদ্ধদ্বার সংলাপ শুরু হয়। এতে অংশ নেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল আর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের ২৩ প্রতিনিধি এবং গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ২১ প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী সূচনা বক্তব্যে আরো বলেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন। এখানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। আজকে অনুষ্ঠানে যে আপনারা এসেছেন- আমি এটুকু বলতে পারি যে, বাংলাদেশের জন্য আজকে আমরা যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছি, সেক্ষেত্রে এই সংলাপ বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি। এছাড়া এই দেশটা আমাদের সবার। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমাদের মহান নেতা, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সে স্বাধীনতার সুফল যেন প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছাতে পারি সেটাই একমাত্র লক্ষ্য, আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোন এবং দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে আত্মত্যাগকারীদের কথা স্মরণ করেন।
