• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
২০২০’র আগেই শতভাগ বিদ্যুৎ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

২০২০’র আগেই শতভাগ বিদ্যুৎ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দেওয়ার সংকল্পের কথা আবারো জানিয়ে বলেছেন, বিদ্যুৎ দরকার, এমন মানুষ খুঁজে খুঁজে সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি আর বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে আলো জ্বালাব। এটি আমাদের লক্ষ্য। বর্তমানে দেশের ৯৩ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন এখন আর বিদ্যুতের জন্য ছোটাছুটি করতে হয় না। এখন আলোর পসরা নিয়ে আপনাদের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। কোথায় বিদ্যুৎ দরকার- এভাবে খুঁজে খুঁজে আমরা মানুষের চাহিদা পূরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে এলাকার উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে আমরা কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদনও বাড়াচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য সারা বাংলাদেশে আমরা বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দেব। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ছিয়ানব্বই থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন ক্ষমতায় ছিলাম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম, সাক্ষরতার হার বাড়িয়েছিলাম, রাস্তাঘাট করে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে মানুষের ভেতর একটা আশার আলো জ্বেলে ছিলাম। কিন্তু সেই আলো নিভে যায় ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর। দুর্নীতি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা- এটাই ছিল তাদের একমাত্র কাজ এবং আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মীর ওপর অকথ্য অত্যাচার, তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের অপকর্মের ফল এদেশে ইমারজেন্সি হয়। এরপর আরো দুই বছর আমরা পিছিয়ে যাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে। এরপর ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একটানা আমরা সরকারে থেকে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৯টি গ্রিড উপকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। এতে ১০৬২ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। গতকাল বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গ্রিড উপকেন্দ্র উদ্বোধন করেন।

একই অনুষ্ঠানে তিনি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় দেশে এই প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ১২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনকৃত ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে সিরাজগঞ্জ ২৮২ মেগাওয়াট সিম্পেল সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, চাঁদপুর ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনার রূপসায় ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামের জুলদা ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (তৃতীয় ইউনিট)। খবর বাসস ও বিডি নিউজ।

নয়টি উপকেন্দ্র হচ্ছে রামগঞ্জ, বরিশাল (উত্তর), বারইয়ারহাট, শিকলবাহা, জলঢাকা, সুনামগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, রাঙামাটি ও মাতারবাড়ী। শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসা উপজেলাগুলো হচ্ছে হরিণাকুণ্ড, ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গা, গোয়ালন্দ, কালুখালী, বামনা, লাখাই, শায়েস্তাগঞ্জ, আজমেরীগঞ্জ, বাহুবল, মেলান্দহ ও ইসলামপুর।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৩০৬টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে। বাকি ৪৩টি উপজেলা চলতি বছরের জুন নাগাদ উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, ২০,৮৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করায় দেশের ৯২ শতাংশের বেশি জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে ১০০ নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুবাদে বাংলাদেশ এখন বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ থেকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী এবং সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ ইসলাম আল জ্যাকব এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যরা এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads