• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে

ছবি : সংগৃহীত

সরকার

মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০৪ জুলাই ২০১৯

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের মতো গঠিত সরকারের পথচলার মাস খানেক পর থেকেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে সরকারের পরিকল্পনা আছে বলে দলের মধ্যে প্রচারণা ছড়িয়ে পড়ে। মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে বলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পর এ আলোচনা আরো জোরাল হয়ে উঠেছে। মন্ত্রিসভায় নতুন করে কারা যোগ হতে পারেন-এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ দলের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও ১৪-দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যেও জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।

মন্ত্রিসভায় থাকার জন্য অনেকে দৌড়ঝাঁপও শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রভাবশালী নেতাদের বাসা, এমনকি গণভবনেও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার আস্থা জয় করে মন্ত্রিসভার তালিকায় নিজের নাম যোগ করা যায় কি না-এ চেষ্টা করছেন তারা। মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হলে নতুনরা কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন-এমন বিশ্লেষণ ও হিসাব-নিকাশও চলছে। আগের সরকারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করা ও নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া কারো নতুন করে মন্ত্রিসভায় যোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এমন আলোচনাও চলছে।

সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতাদের আলোচনা ও আলাপে বেশি আসছে নৌপরিবহন, পানিসম্পদ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর কথা। ওই তিন মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে কেউ এখনো শপথ নেননি। অর্থ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন কোনো মুখ যোগ হতে পারে বলেও আলোচনা আছে। অর্থমন্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রীর বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ভাবা হচ্ছে। নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হতে পারে, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত দেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও নতুন মুখ যোগ হতে পারে। দ্বিতীয় দফায় সম্প্রসারণে আরো অন্তত আট থেকে দশজন যোগ হতে পারেন মন্ত্রিসভায়। তবে এ সংখ্যা দশের বেশি হবে না। সেখানেও নতুনদের প্রাধান্য থাকবে। আগের দুবারের মন্ত্রিসভার সফল ও জনপ্রিয় মন্ত্রীদের কেউ কেউ বর্তমান মন্ত্রিসভায় যোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত সোমবার সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুনর্বিন্যাস নয়, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত (আকার বাড়ানো) হতে পারে। তবে এটা সম্পূর্ণই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। চীন সফর শেষে তিনি দেশে ফিরে এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। ক্যাবিনেট সাফল-রিসাফলের বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আমার মনে হয়, কিছু কিছু পদ-পদবি এখনো খালি আছে। কাজেই এক্সপান্ড (সম্প্রসারিত) হতে পারে। যেমন মহিলা ও শিশু, এখানে কোনো মন্ত্রী নেই।’

সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে ফেরার পর মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হতে পারে। সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের আগে মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ যোগ করার একটা পরিকল্পনা সরকারের ছিল। চমকের মন্ত্রিসভায় জনপ্রিয় ও নতুনদের দ্বিতীয় দফায় যোগ করে চমক দিতে চায় সরকার। ফলে শিগগিরই হতে পারে মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো সম্প্রসারণ। এর আগে সরকারের পথচলার প্রায় সাড়ে চার মাসের মাথায় মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্বে কাটছাঁট করা হয়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গত কয়েক দিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে মন্ত্রিসভায় নতুন করে কারা স্থান পাচ্ছেন। তবে মন্ত্রিসভায় নতুন কারা স্থান পাচ্ছেন, তা একান্তই দলের সভাপতি শেখ হাসিনার এখতিয়ার। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যাদের চাইবেন, তাদেরই জায়গা হবে নতুন করে। প্রধানমন্ত্রী ও তার দপ্তরই নির্ধারণ করবে, কখন মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ নেওয়া হবে। সংবিধানই প্রধানমন্ত্রীর এ ক্ষমতা নিশ্চিত করে।

সূত্র জানায়, আগের সরকারে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন আর একাদশ সংসদে যারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ইতোমধ্যে দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের মধ্যে কারো মন্ত্রিসভায় নতুন করে যোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগের সরকারে মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন না, তাদের মধ্যে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দায়িত্ব পেয়ে থাকলেও কারো কারো মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

জোটের শরিক দলের কেউ দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন কি না-এমন প্রশ্নও অনেকের। প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ সদস্যের বর্তমান মন্ত্রিসভার সবাই আওয়ামী লীগের। শরিক দলের কাউকে এবার মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। দ্বিতীয় দফায়ও ১৪ দলের কারো মন্ত্রিসভায় যোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads