• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
কৃতিত্ব নতুন প্রজন্মের : প্রধানমন্ত্রী

ছবি: পিআইডি

সরকার

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ

কৃতিত্ব নতুন প্রজন্মের : প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে জাতির পিতার হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগই দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করল। আমি এই অর্জন উৎসর্গ করছি দেশের নতুন প্রজন্মকে, যারা বাংলাদেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে তালিকাভুক্ত হওয়া উপলক্ষে শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর কারণে প্রায় এক বছর পর আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। তবুও সরাসরি না, ভার্চুয়ালি। একযুগ আগের বাংলাদেশ ও আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা গত শুক্রবার স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছি। এটা সমগ্র জাতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। আমাদের এই উত্তরণ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছি। আমরা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশের জন্য এ উত্তরণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোনো দেশ পর পর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়। সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে। উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ ডলার, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৮২৭ ডলার।

বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। অর্থাৎ মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদণ্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫.৪। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। কিন্তু ওই সময়ে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭। সিডিপির প্রবিধান অনুযায়ী, উত্তরণের সুপারিশ পাওয়ার পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় ভোগ করতে পারে।

নিউইয়র্কে ইউএন-সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় গত শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এই শুভ মুহূর্তে আমি দেশ ও দেশের বাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশের সকল নাগরিককে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে, একজন নগণ্য সেবক হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার কারো মৃত্যু যেমন কাম্য নয়, তেমনি এই আইন নিয়ে অশান্তি সৃষ্টিও কাম্য নয়। কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে কী করার আছে। ডিজিটাল দেশ যখন করেছি, নিরাপত্তার দায়িত্বও আমাদের। তরুণরা যাতে অসামাজিক কার্যকলাপ বা জঙ্গিবাদে যুক্ত না হয়, এ জন্যই এই আইন অপরিহার্য। যারা সমালোচনা করার, তারা করবেই। কিন্তু বাস্তবতা তারা কি উপলব্ধি করছে?

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতো এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। গণমাধ্যমকর্মীরা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads