• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

শেষ পাতা

রবির ব্যাংক হিসাব জব্দে চিঠি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মূল সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব ৩ কার্যদিবস জব্দ রাখতে সব ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।


এলটিইউ এর কমিশনার মো. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গতকাল সক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে রবি আজিয়াটা লিমিটেড বলছে, কর ফাঁকির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাদের সঙ্গে ‘দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে’ এনবিআর এ ব্যবস্থা নিয়েছে।


এ বিষয়ে জানাতে চাইলে কমিশনর মতিউর রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, কিছু ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ায় আমরা রবির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছি। যথাসময়ে ফাঁকির অর্থ পরিশোধ না করলে আইন অনুযায়ী পুনরায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


চিঠিতে বলা হয়েছে, মূসক আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী রবির রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটনে এলটিইউ এর অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়। তদন্ত দল চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রবির গুলশানের কর্পোরেট অফিস পরিদর্শন করে। এসময়ে রবির ট্রায়াল ব্যালেন্স, প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, সিম বিক্রি, বিটিসিএল এর ইনভয়েস তথ্যাদি সংগ্রহ করে।


এসব তথ্যাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৫ টাকার অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক, ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকার স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর অপরিশোধিত মূসক ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া ৮১ লাখ ৬ হাজার সিমের উপর কম প্রদর্শিত সম্পূরক শুল্ক ও মূসক এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার উপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত মূসক বাবদ ৮১ লাখ ৭২ হাজার টাকাসহ মোট ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।


চিঠিতে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ২৬ এর উপধারা ৪ অনুযায়ী রবি আজিয়াটা লিমিটেডের এ ফাঁকিকৃত রাজস্ব আদায়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব আগামী ৩ কার্যদিবসের জন্য জব্দ করতে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অনুরোধ করা হয়েছে।


এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রবির কমিউনিকেশনস অ্যান্ড করপোরেট রেসপনসিবিলিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবির বলেন, ‘এটি কর ফাঁকি নয়। এনবিআর এর সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের চলমান ডিসপিউট।’


মূসক আইনের ২৬ (খ) এর ৫ উপধারা অনুযায়ী, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে শুনানির সুযোগ দেওয়াসহ আইনের অন্যান্য বিধান অনুসরণ করার কথা থাকলেও এনবিআর তা করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।


এর আগে প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রবিকে চিঠি দেয় এনবিআর। সে সময় রবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ভিত্তিহীন’ অডিটের মাধ্যমে এনবিআর ‘অন্যায্য’ দাবি করছে।


২০১৬ সালে দুই অপারেটর রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন সেবাদানকারী কোম্পানিতে পরিণত হয় রবি আজিয়াটা লিমিটেড। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী, রবির গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২৯ লাখ, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের প্রায় ২৯ শতাংশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads