• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
বেতনের দাবিতে ঢাকা-গজীপুরে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

বেতনের দাবিতে ঢাকা-গজীপুরে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৫ এপ্রিল ২০২০

বেতনের দাবিতে ঢাকা-গজীপুরে বিক্ষোভ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। এপ্রিলের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও মালিকরা মার্চ মাসের বেতন এখনও পরিশোধ না করায় নিরুপায় পোশাক কারখানার শ্রমিকরা নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর আশুলিয়া, উত্তরা, বাড্ডা, ভাটারা,মিরপুর, ভাষানটেক, শাহআলি, তেজগাঁও, মতিঝিল এলাকায় শতশত শ্রমিক বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামে। দেড় দুই-ঘণ্টা অবস্থানের পর সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিকদের আশ্বাসের ভিত্তিতে শ্রমিকদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরানো হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে, বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে বিভিন্ন স্থানে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ফের বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করছে।

মহামারী ছড়ানো ঠেকাতে সরকার ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বেশিরভাগ তৈরি পোশাকের কারখানাও এখন বন্ধ রয়েছে।তবে সরকার এরই মধ্যে কারখানার শ্রমিকদের বেতনের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে মালিকদের।

১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পরিশোধ না করলে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। ঢাকার আশুলিয়ায় এসএমএস গার্মেন্টসের সামনের সড়কে বুধবার সকাল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর‌্যন্ত অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন বলে তুরাগ থানার ওসি মুত্তাকিন জানিয়েছেন।তিনি বলেন, “পরে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়, মালিকের সাথে কথা চলছে।”

দক্ষিণখানের হাজী রোডে স্যার ডেনিম কারখানার শ্রমিকরা সামনের রাস্তায় বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্দ অবস্থান করছিল। পরে মালিকপক্ষ বেতন দিতে রাজি হওয়ায় তারা চলে যায় বলে দক্ষিণখান থানার ওসি সিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন জানান।বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ বলেন, প্রগতি সরণি এলাকায় শমসের রাজিয়া নামের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। 

মিরপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) দুলার হোসেন বলেন, দারুসসালাম এলাকার এমইসি গার্মেন্টস শ্রমিকরা গাবতলী এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে।  

ভাষানটেক থানার ওসি সাব্বির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কারখানার মূল মালিকের কাছ থেকে অপর এক ব্যাক্তি ভাড়া নিয়ে কাজ চালায়। পরে সেই মালিকের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের সাথে বসিয়ে দেওয়া হয়। মলিক তাদের আশ্বস্ত করার পর শ্রমিকরা চলে যায়।

মতিঝিল থানা এলাকার দক্ষিণ কমলাপুরে বিন্নি গার্মেন্টস এবং সরদার নিট অ্যান্ড ওয়্যার নামে অপর একটি গার্মেন্টসের দুই শতাধিক শ্রমিক বুধবার সকালে কমলাপুর এলাকার সড়কে অবস্থান নেয়। বেতন ভাতার জন্য বিক্ষোভ করে।

কারওয়ান বাজারের কাঠপট্টিতে ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স নামের গার্মেন্টস শ্রমিকরা সকালে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে বলে জানান তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাসনাত খন্দকার। তিনি বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে গার্মেন্টেসের ভেতরে নেওয়া হয়েছে। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বেতনের দাবিতে গাজীপুরে ফের বিক্ষোভ, অবরোধ- গতকাল বুধবার মহানগরীর টঙ্গী, তিন সড়ক, সালনা, ভোগড়া, শরীফপুর ও মির্জাপুর এলাকায় এসব বিক্ষোভ ও অবরোধের ঘটনা ঘটে।
এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-গাজীপুর সড়কে যানবাহন চলাচল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যায় এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার পরিদর্শক সৈয়দ রাফিউল করিম বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে মহানগরীর তিন সড়ক এলাকার স্টাইলক্রাফট ও ইন্টারম্যাক্স পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এক পর্যায়ে তারা কারখানার সামনে ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন।” তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। পরে ইন্টারম্যাক্স কারখানার কর্তৃপক্ষ ২০ এপ্রিল এবং স্টাইলক্রাফট কর্তৃপক্ষ ২৭ এপ্রিল বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
সদর থানার ওসি আলমগীর ভুইয়া বলেন, একই দিন সকালে সিটি কর্পোরেশনের সালনা এলাকার শ্যামলী গার্মেন্টসের শ্রমিকরা মার্চের বেতনের দাবিতে কারখানা সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। “পরে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ১৮ এপ্রিল বেতন প্রদানের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।”

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads