প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হলো না দিনমজুর রিকশাচালক আইয়ুব আলীর বানানো সেই জল-ডাঙার নৌকা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসার কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যতিক্রম এই নৌকা উপহার দিতে চেয়েছিলেন বাগেরহাটের কেশবপুর ইউনিয়নের ৩ নং গোটাপাড়া এলাকার মৃত সিকান্দার আলীর ছেলে দিনমজুর আইয়ুব।
তবে গত ২৯ নভেম্বর বাগেরহাট থেকে রওনা হয়ে রাতে নৌকাটি সড়কপথে ঢাকায় পৌঁছলে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নৌকাটি। দ্রুতগামীর একটি মোটরসাইকেল তাকেসহ নৌকাটিকে ধাক্কা দিলে নৌকার চাকা ভেঙে খাদে পড়ে যায়, এতে সে আহত হয় এবং নৌকাটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি দেখতে পান নৌকায় থাকা সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং লাল, হলুদ সিগন্যাল বাতি, মোটর, মেমোরি, জাতীয় পতাকা, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত ব্যানারসহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। পুলিশ নৌকাটি উদ্ধার করায় রেকার খরচও দিতে হয়নি। রাতদিন রিকশা চালিয়ে, ৬ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুই লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকা খরচ করে পরম যত্নে বানানো নৌকাটি এখন পড়ে আছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে এক্সপ্রেস এর আনোয়ারা ফিলিং স্টেশনের পাশে।
জানতে চাইলে দিনমজুর আইয়ূব বলেন, আমি নৌকা পাগল মানুষ, আমি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। তাদের ভালোবেসে ২০১৭ সালে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ডাঙায় চলাচলের উপযোগী একটি নৌকা বানিয়ে শাহবাগ, ধানমন্ডি, গুলিস্তানসহ রাজপথে চালিয়ে নৌকার পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ এ নৌকাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হলো না। তবে যত কষ্টই হোক আমি এটা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে চাই।
এব্যাপারে হাসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি আফজাল হোসেন বলেন, নৌকাটিকে আমরা হাইওয়ে দিয়ে না গিয়ে লোকাল রাস্তা দিয়ে যেতে বলেছিলাম, পরে শুনি হাইওয়ে রাস্তা দিয়ে গিয়ে রাজেন্দ্রপুরে নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে নৌকাটি রেকারের সাহায্যে একটি পেট্রোল পাম্পে নিয়ে রেখেছি। তার কাছ থেকে কোন রেকার বিলও নেওয়া হয়নি।
