খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। এরই মধ্যে চলছে ভোটের নানা হিসাব-নিকাশ। ভোটারদের মধ্যে প্রাধান্য পাচ্ছে নৌকা-ধানের শীষ প্রতীক। তাছাড়াও ভোটের হিসাবে অন্তত ৯টি ভোটব্যাংক গুরুত্বপাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের হিসেব বলছে, নতুন ৫৩ হাজার ভোটার এবং ১ লাখ বস্তিবাসী ভোটের ফল নির্ধারণে প্রধান্য রখবে। খুলনা সিটিতে এখন মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর আগে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুজ্জামানের কাছে ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকে পরাজিত করেন।
খুলনা সিটিতে মোট ভোটের ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট বলে ধারণা করা হয়। ২০১৩ সালে সিটি নির্বাচনে এদের একটা অংশ আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেককে ভোট দেয়নি বলে শুনা গেছে। তবে এবার সরকারি দলের প্রার্থীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রচার গুরুত্ব পাচ্ছে ভোটারদের কাছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই নির্বাচনের প্রভাব ফেলবে।
যদিও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের খুলনা মহানগরের সভাপতি বীরেন্দ্র নাথ ঘোষ বলেন, খুলনা শহরে সংখ্যালঘুদের ভোট প্রায় ৮৭ হাজার। এবার আমরা ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকেও কারও পক্ষথেকে ভোট চাওয়া হচ্ছে না। যার যাকে খুশি ভোট দেবে।
তিনি বলেন, আমি নগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক। আমি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী কিন্তু আমি নিজেও দলের সমর্থন পাইনি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরই এখানে বড় ভোটব্যাংক জামায়াতে ইসলামীর। দলটির খুলনা মহানগর কমিটির সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহ আলমের দাবি, শহরে এবার তাদের ভোটার আছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার। অবশ্য এখানকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের ভোট এত বেশি হবে না। বড়জোর ৪০ হাজার হতে পারে।
হেফাজতে ইসলাম প্রকাশ্যে কাউকে সমর্থন বা সংগঠনের ব্যানারে কারও পক্ষে না নামলেও তারা সক্রিয় রয়েছে। তারা বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গেই থাববে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তারা প্রকাশ্যে কাজ কাজ করছেনা। তাদের ভোট প্রায় ৩০ হাজার।
এখানে বিহারিদের একটি জনগোষ্ঠী আছে। তারা সর্বদাই আওয়ামী লীগবিরোধী। তাদের ভোটার সংখ্যাও কম নয়। জানা গেছে তাদের ভোটার আছে ৬-৭ হাজার।
আঞ্চলিক ভোটার, অর্থাৎ অন্য জেলা থেকে যারা এখানে এসে স্থায়ী হয়েছেন, তাদের বড় অংশ আওয়ামী লীগের দিকে আছে বলে মনে করা হয়।
পাটকল শ্রমিকেরাও একটা ভোটব্যাংক। তারা অনেকে বিভিন্ন দাবিতে অনেক দিন ধরে আন্দোলনে আছেন। সরকারি দলের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এই ভোট ভাগাভাগি হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
নগরীতে শ্রমজীবী বস্তিবাসীর ভোট প্রায় ১ লাখ। এই ভোট নিয়ে কারও পরিষ্কার ধারণা নেই। সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামের বলেন, বস্তিবাসী শ্রমজীবীদের অনেক উপার্জন এখন। একজন রিকশাচালক দৈনিক পাঁচশ-হাজার টাকা উপার্জন করেন। তারা ভেবেচিন্তে ভোট দেবেন বলেই তার অভিমত।