• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর ২০১৮

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি এবং তার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠনে কারা কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাসপাতালে ভর্তির পর দ্রুততম সময়ে তার চিকিৎসা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে মানসম্মত চিকিৎসা দিতেও বলা হয়েছে বোর্ডকে। নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় আগে সরকার যে মেডিকেল গঠন করেছিল সেখান থেকে বাদ পড়বেন তিন সদস্য। বোর্ডে আগের দুই সদস্য বিএসএমএমইউ’র ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ থাকবেন।

বাদ পড়ছেন কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী এবং চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী। তাদের বদলে নতুন তিনজনকে বোর্ডের সদস্য করতে হবে যারা সরকারদলীয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং বিএনপিদলীয় ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) বর্তমান বা সাবেক সদস্য ও সমর্থক নন।

বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার নির্দেশনা চেয়ে খালেদা জিয়ার করা একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া তার পছন্দমতো ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোলজিস্ট ও টেকনোলজিস্ট নিতে পারবেন। বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনতে পারবেন। আদালত বলেছেন, দর্শনার্থী সাক্ষাৎ করতে চাইলে কারাবিধি (জেল কোড) অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। যেহেতু আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সেহেতু যথাযথ সম্মানের সঙ্গে তার মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে কারা কর্তৃপক্ষ ও বিএসএমএমইউ’র উপাচার্যকে। এটা অস্বীকার করা যাবে না যে বাংলাদেশের বড় বড় চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও আইনজীবী কেউই দল-মতের ঊর্ধ্বে নন। তবু তারা পেশাদারত্ব নিয়ে কাজ করেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল শুনানি করেন। সরকারপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মোখলেসুর রহমান।

এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আবদুল বাসেত মজুমদার, মওদুদ আহমদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, রাগিব রউফ চৌধুরী, এহসানুর রহমান, আতিকুর রহমান, ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে ও চিকিৎসাসেবার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি আদেশ দেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলাম। যে ধরনের আদেশ আদালত দিয়েছেন তাতে মনে হয় না আপিল করার প্রয়োজন হবে। তবে আদেশ হাতে পাওয়ার পরে দেখি কোনো বিষয়ে আপিল করার সুযোগ রয়েছে কি না, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের জানান, সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসাপ্রাপ্তির অধিকার ভূলণ্ঠিত করেছিল। হাইকোর্ট সে অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন।

গত ৯ সেপ্টেম্বর দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিট আবেদনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসাসেবা-সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনার আরজি জানানো হয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads