• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
সরকার পদে পদে সংবিধান লঙ্ঘন করছে : ড. কামাল

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের নুর আহমদ সড়কে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মহা সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন

ছবি: বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

সরকার পদে পদে সংবিধান লঙ্ঘন করছে : ড. কামাল

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৭ অক্টোবর ২০১৮

সরকার পদে পদে সংবিধান লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন,  মিছিল সমাবেশ জনগণের সাংবিধানিক অধিকার।সংবিধানে আছে, দেশের মালিক জনগণ, সরকার সেবক। আজ সেবকরা মালিককে কষ্ট দিচ্ছে। তাদের সভা সমাবেশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রিতভাবে তারা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে পরিচালনার চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামের লালদিঘীতে কেন ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশ কেন করতে দেওয়া হল না তার কৈফিয়ত আদালতের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে আদায় করবো।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের নুর আহমদ সড়কে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, লালদিঘীতে সমাবেশ হলে সবাই বসে কথা শুনতো। রাস্তার উপর সমাবেশে এসে টানা ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনা কষ্টকর। যারা এই কষ্ট দিলো তাদের বিচার জনতার আদালতে হবে। ২০১৪ সাল থেকে সংবিধান লঙ্ঘন হয়ে আসছে।

মহা সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের চেয়ারপার্সন কারাগারে যাওয়ার আগে বলে গেছেন, ‘আমি যদি নাও থাকি, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে হবে।’ স্বৈরাচার সরকারের কারাগারে আমাদের অসংখ্য নেতা কর্মী বন্দী রয়েছে। সারা দেশে নতুনকরে ৫ হাজার মামলা দিয়ে প্রায় ৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। পায়ের নিচে মাটি নেই বলেসরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বন্দী করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু বস্তবতা হচ্ছে, জনগণকে জিম্মি করে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বন্দুক, পিস্তল দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বপ্ন পাকিস্তানীরাও দেখেনি।

সভায় আ স ম আব্দুর রব বলেন, দেশের জনগণ আজ ঐক্য গড়েছে স্বৈরাচারী সরকারকে বুঝিয়ে দিতে। জনগণ এই সরকারকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাবে একদিন।

তিনি বলেন, আমরা এখন লড়াইয়ে নেমেছি। এ লড়াইয়ে জিততে হবে। সরকার যদি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলাপ না করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে তাহলে আমরা মনে করবো, সরকার বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে চায়।

আ স ম আব্দুর রব বলেন, পাকিস্তান সরকার মাওলানা ভাষানীকে গরু চুরির মামলা দিয়েছিল। সিঁধেল চুরির মামলা দিয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু বাংলার জনগণ দেশ থেকে তাদের বিতাড়িত করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ইতিহাস থেকে সরকাকে শিক্ষা নিতে আহ্বান জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। গণতন্ত্রকে সু-সংহত করতে আমরা সাত দফা দাবি জানিয়েছি। তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে। জনগণ এর বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ সরকার স্বৈরাচার উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ দল হিসেবে একটি অসহিষ্ণু রাজনৈতিক দল। তাদের তারণে জনগণ ভোটের অধিকার হারিয়েছে, দেশ হারিয়েছে গণতন্ত্র। গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ স্বাধীনতা হারিয়েছে। এ স্বৈরাচারকে তাড়াতে যে ঐক্য প্রয়োজন ছিল তা হয়েছে। ড. কামালের নেতৃত্বে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ ঐক্যফ্রন্টর সকল নেতাই মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি বলেন, সরকার যেকোন ভাবে একদলীয় নির্বাচন করতে চায়। তাই তারা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করেছে অন্যায়ভাবে।

এর আগে শনিবার সকালে সমাবেশে অংশ নিতে ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা চট্টগ্রামে পৌঁছেন। শুক্রবার রাতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ জোট নেতারা চট্টগ্রামে আসেন। শনিবার সকালে তারা শাহ আমানত (র.) মাজার জিয়ারত করেন।

এদিকে সমাবেশ ঘিরে শুক্রবার রাত থেকে কাজীর দেউরি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। সংঘাত মোকাবেলায় পুলিশ জলকামান, সাজোয়া যান প্রস্তুত রাখে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads