• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে : কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে : কাদের সিদ্দিকী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ অক্টোবর ২০১৮

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য রাতদিন ডাকাডাকি করা হচ্ছে। আমি সেখানে কীভাবে যাব, যে মতিয়া চৌধুরী আমার নেতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল, তার সঙ্গে পাশাপাশি বসে রাজনীতি করব, আমার পক্ষে তা সম্ভব না। আজ রোববার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিরোধ যুদ্ধে জাতীয় মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের মিলনমেলায় তিনি এ কথা বলেন। এই মিলনমেলায় কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও ছোট ভাই বাবুল সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ ১৯ বছর পর লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে একই মঞ্চে বসেন তিনি।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজকে সরকারের জয়জয়কার। যেদিকে তাকাই সেদিকে আওয়ামী লীগ। সেদিকে শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব জানি না। আল্লাহ কখন কার জন্য কী লিখে রাখেন আমরা কেউ জানি না। 

’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রতিরোধ যুদ্ধের জাতীয় মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় আমরা প্রতিরোধ গড়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আমি বলব, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের মাধ্যমে যদি জাতির কলঙ্ক মোচন করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা শুধু সরকারের স্বীকৃতি নয়, জাতীয় স্বীকৃতি চাই। যদি স্বীকৃতি না দেওয়া হয় তাহলে আজ ঘোষণা করা হোক আমরা সেদিন প্রতিবাদ করে ভুল করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হোক।

তিনি বলেন, যদি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তাহলে মুখ বুজে বসে থাকব না। আমি মনে করি এই স্বীকৃতি আদায় হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। একই সঙ্গে বলতে চাই, কোনো মানুষ যদি পিতৃপরিচয় হারিয়ে ফেলে, কেউ যদি পিতৃপরিচয় অস্বীকার করে, তাহলে তার আর কিছু থাকে না। তাকে কিন্তু সামাল দেওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। এটা মনে রাখতে হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু জেল থকে বের হলে আমরা তার সঙ্গে তখন কথা বলতে পেরেছি। আমার বাবা কথা বলতে পেরেছে। কিন্তু এই প্রথম ১৯ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য, দেখা করার জন্য তিন তিনবার চেষ্টা করেছি। তার পিএসদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কোনো সাড়া পাইনি। তাকে না পেয়ে শেষে চিঠি দিয়েছি। যেন এই অনুষ্ঠানে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি।

তিনি আরো বলেন, আজকের এই মিলনমেলায় যেন কেউ না আসতে পারে তার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইয়াহিয়ার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু দেশের ভেতর এমন শত্রুতা আগে কখনো দেখিনি।

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন একদিকে শ্রমিকনেতা অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী। তিনি আজকে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায় আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কারো পাশে দাঁড়াই না। ন্যায় ও সত্যের পক্ষে দাঁড়াই। এজন্যই পত্রিকায় দেখে আমন্ত্রিত না হয়েও চলে এসেছি। রাজনৈতিক নেতৃত্বে কাদের সিদ্দিকীকে স্বীকার করি না, তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও ১৫ আগস্ট-পরবর্তী প্রতিরোধ যুদ্ধকে স্বীকার করি। তার নেতৃত্বেই সেদিন প্রতিরোধ যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলাম। তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে তার মর্মকথা বোঝার সামর্থ্য অনেকের নেই। বক্তব্য বোঝার প্রজ্ঞা এ দেশের রাজনীতিবিদদের নেই।

অনুষ্ঠানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতীক, অর্থ সম্পাদক আবদুল্লাহ বীরপ্রতীক, কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, ভাই বাবুল সিদ্দিকী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান কায়সার চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads