• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জৈষ্ঠ ১৪২৮
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের সংলাপ

গণভবনে গতকাল রাতে যুক্তফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নেন ১৪ দলের নেতারা

ছবি - বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের সংলাপ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ নভেম্বর ২০১৮

ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের দ্বিতীয় দিনে একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যাতে জনগণ তাদের নেতৃত্ব খুঁজে নিতে পারে, কীভাবে তা খুঁজে নিতে পারে সেটাই লক্ষ্য।

তফসিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, সংসদ ভেঙে দেওয়া, ইসি পুনর্গঠন, ইভিএম ব্যবহার না করা ও ভোটে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সাত দফা দাবি নিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে আসে যুক্তফ্রন্টের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বিরোধী দলগুলোর এসব দাবি মানা ‘সম্ভব নয়’ বলে আসা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অনেকটা আকস্মিকভাবেই সংলাপে বসতে রাজি হন। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সংলাপের সূচনা হয়।

যুক্তফ্রন্টের দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সম্ভব না হলে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। ২. নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীনস্থ করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারি দলের প্রার্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ করতে হবে। ৩. নির্বাচনকালীন সরকার চাই। জাতীয় সরকার গঠন, প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। অথবা মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা জোট থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েও একটি সন্তোষজনক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ ক্ষমতা সীমিত করতে হবে। ৪. দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আমাদের জন্য গর্বের। তারা বিভিন্ন দেশে নির্বাচনকালীন সহিংসতা রোধ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সুতরাং নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তিশৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে-সেহেতু আমাদের প্রস্তাব- (ক). সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এবং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত মোতায়েন করতে হবে। (খ) নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনীকে সীমিত ক্ষমতা দিতে হবে। ৫. ইভিএম- আধুনিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক নির্বাচনে আমাদের অনেক আগ্রহ আছে, কিন্তু ইভিএম সম্পর্কিত যেসব প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জন প্রয়োজন তা আমাদের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথেষ্ট নেই। সেজন্য এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না বলে আমরা মনে করি। ৬. নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। ৭. নির্বাচন সম্পর্কিত মামলা নির্বাচনের পর এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন অতি সত্বর প্রণয়ন করতে হবে।

সংলাপে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন— বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুুল মান্নান, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা চৌধুরী, মাহমুদ আলী, মাহমুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, নির্বাহী সদস্য মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজা, বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বিএলডিপি সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, জাতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান, দলটির মহাসচিব দিলীপ কুমার দাস, লেবার পার্টির মহাসচিব মঞ্জুর হোসাইন ইসা, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার দাস।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে কোনো বিশেষ সমাধান পায়নি ওই ফ্রন্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads