• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
সরকারি দলকে জেতাতে জোটের ৮০ মনোনয়ন বাতিল

এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

২০ দলের বৈঠকে অলি

সরকারি দলকে জেতাতে জোটের ৮০ মনোনয়ন বাতিল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮

২০-দলীয় জোট অভিযোগ করেছে বাছাইয়ে জোটের ৮০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে সরকারি দলের জয়লাভকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জোটের বৈঠকের পর প্রধান সমন্বয়ক ও এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ এমন অভিযোগ করেন।

অলি আহমদ বলেন, আজকে (রোববার) যে বাছাই ছিল সেখানে খালেদা জিয়াসহ প্রায় ৮০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি বলব, এটা বিরোধী দলকে বের করে দেওয়া হয়েছে, ভ্যাকেট করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাদের (সরকারি দল) জয়লাভ করার পথটা এগিয়ে রেখেছে। এভাবে হলে বিরোধী দলে আমরা যারা আছি আমাদের পক্ষে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে টিকে থাকা হয়তো সম্ভব হবে না।

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না থাকার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে বললে অলি বলেন, দেখুন আমরা তো নির্বাচন করতে চাই, নির্বাচনে আছি। এখন প্রার্থী যদি না থাকে তাহলে কাকে নিয়ে নির্বাচন করবেন? ইতোমধ্যে তো ৮০ জন নেই। সরকার তো কাউকে ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। প্রতিদিন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ মোটেও নেই, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এভাবে ভয়ভীতি ও গ্রেফতার হলে আপনারাই বলুন আমরা কীভাবে নির্বাচন করব। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের কাছ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা চাই।

এই সময়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, কর্নেল অলি বলেছেন আমরা নির্বাচন করতে চাই, নির্বাচনে আছি। 

নানা অজুহাতে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে অভিযোগ করে অলি আহমদ বলেন, আমরা জাতির কাছে ওয়াদা করেছিলাম আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। সেই অনুযায়ী ২০-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নমিনেশন জমা দেওয়া হয়েছে। তবে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, নমিনেশন জমা দেওয়ার আগে ও পরে জোটের অনেক নেতাকে মিথ্যা মামলা দেখিয়ে জেলে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে, যাতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকে।

এ ছাড়া খালেদা জিয়াসহ ৮০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে অনেক ছিল একই ধরনের। যেমন মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে তার রিসিভ কপি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে। পদত্যাগ গ্রহণ করবে কী করবে না এটা সরকারের ব্যাপার- এই অজুহাত দেখিয়ে অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আবার অনেককেই বলা হয়েছে, আপনার নাম ঋণখেলাপির মধ্যে আছে। আদৌ তারা কখনো ঋণ নেননি, অথচ খেলাপির তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবার সরকারি বিধি-বিধান মেনে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ করেছে এই ধরনের অনেককেই নির্বাচনের অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, বিএনপির মহাসচিব প্রায় ৬শ’র উপরে দস্তখত করেছেন। দুই একটা দস্তখত এদিকে ওদিক বাঁকা হতেই পারে। এটা তো সিল মেরে করেননি, হাতেই করতে হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারের উচিত ছিল ৫ মিনিট সময় দিয়ে বিএনপির কাছ থেকে সঠিক তথ্যটা নেওয়া, অথবা আমরা প্রত্যেকটা দলের পক্ষ থেকে যারা নিজের দলের প্যাডে সিল দিয়ে দস্তখত দিয়ে নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছি, সেগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। কোনো কিছু না করে একতরফাভাবে ২০-দলীয় জোটকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ৮০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করে অলি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা ১৩টা পয়েন্ট নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা গ্রহণও করেছিল। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেয়নি।  এই কমিশনের কোনো ক্ষমতা আছে বলে আমরা মনে করি না। তারা বোধ হয় পোস্ট অফিসের কাজ করছে। সরকার আদেশ দিচ্ছে, তারা সেটা পালন করছে, জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত এই বৈঠক হয়।

কর্নেল  (অব.) অলির সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, খেলাফত মজলিসের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নূর হোসাইন কাশেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার মহাসচিব খোন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, লেবার পার্টির ফারুক রহমান, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, এনডিপির মো. আবু তাহের, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) শফিউদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads