• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
গণমুখী হতে চায় ঐক্যফ্রন্ট

লে‍াগো ঐক্যফ্রন্ট

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

গণমুখী হতে চায় ঐক্যফ্রন্ট

# দল ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ বিএনপির # ভবিষ্যতে নেতা নির্বাচিত হবে কর্মীর ভোটে 

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ০৯ জানুয়ারি ২০১৯

গণমুখী দাবি নিয়ে রাজপথেই থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘সংসদ বিমুখ’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাদের বিচারে মাত্র সাতজন সদস্যকে নিয়ে সংসদে থেকে কোনো ভূমিকাই রাখা যাবে না। ‘পালের শোভা’ হয়ে শুধু প্রতিপক্ষের তির্যক বচন শোনা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। তাই মানুষের কাছে যাওয়ার কথা ভাবছে দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনা করা বিএনপি, যে দলটি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক। একই অভিমত তাদের মিত্রদেরও। এ কারণেই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অটল জোট সদস্যরা। বছরের শুরু থেকেই গণমুখী দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে থাকতে চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।  

এদিকে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড কাজ শুরু করেছেন। শিগগিরই জেলা সফরে বের হবেন দলটির শীর্ষ ও সিনিয়র নেতারা। অপরদিকে নানামুখী লড়াইয়ে পরাজয় ও ভোটের মাঠে ভরাডুবির নেপথ্যের কারণ খুঁজছে দলটি। মিত্রদের কাছ থেকেও পরামর্শ এসেছে। সব মিলিয়ে আগামী দিনের নেতা নির্বাচনের জন্য শীর্ষ নেতাদের আশির্বাদের বদলে কর্মীদের ভোটের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার চিন্তাও করা হচ্ছে।

২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে পাঁচ বছর সংসদের বাইরে ছিলো দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দীর্ঘ সময়ে ‘কিঞ্চিত’ ছিল রাজপথে। তাতেও জনগুরুত্বপূর্ণ দাবির বদলে রাজনৈতিক বা দলীয় দাবির গুরুত্ব দেখা গেছে। ফলে বিএনপির সঙ্গে জনতার দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরইমধ্যে তিনমাস আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়েছে। যদিও জোটের শরীক দলগুলোর জনভিত্তির সূচক তলানীতে। তাই জোট করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে এবারো থাকা হচ্ছে না সংসদে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের পরপরই, তা প্রত্যাখান করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপি জোট। ঐক্যফ্রন্টসহ বিএনপির সর্বসাকুল্যে যে সাতজন বিজয়ী হয়েছেন তারাও শপথ নিচ্ছেন না। নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে ফলাফল প্রত্যাখান করে, এবার নিজেদের অভিযোগ প্রমাণে কাজ করছেন তারা। একইসঙ্গে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করা এবং বিদেশি কূটনীতিকদের মাধ্যমে, বিশ্ববাসীর সামনে নির্বাচনে অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরার চেষ্টা করছে বিএনপি।

দলীয় সূত্রের খবর, সংগঠনকে শক্তিশালী করাই বিএনপির ‘প্রথম টার্গেট’। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছে তারা। এর অংশ হিসিবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে আগামী মাসে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফরে যাওয়ার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানো হবে। তবে এবার কাউন্সিলে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এসব সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে বিএনপি। এছাড়া ভোটে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনী ট্রাইবু্যুনালে প্রার্থীদের মামলার পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও মাঠে থাকবে। তবে আপাতত কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যাবে না তারা।

দলটির নীতিনির্ধারনী ফোরামের একাধিক নেতার মতে, বিএনপির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে আগামী দিনের পথ চলতে হবে। দল ইতিমধ্যে নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে নেতারা নতুন নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন। এ দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাবেন। ভোটের অনিয়ম তদন্তে আন্তর্জাতিক মহলেও কাছেও যাবেন তারা। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচিও চালিয়ে যাবেন।

দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, এক যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকার পর নির্বাচনের বিপর্যয়ে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মন ভেঙ্গে গেছে। হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হলেও তৃণমুলের নেতাকর্মীরা সুদিনের আশায় ছিল। কিন্তু নতুন করে বিপর্যয়ে তারা আরো হাতাশ হয়ে পরেছে। এজন্য তাদেরকে চাঙ্গা করাই বিএনপির প্রথম লক্ষ্য। সাংগঠনিকভাবে দল চাঙ্গা হলের পরবর্তীতে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে। এজন্য সাংগঠনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, ভবিষ্যতে করণীয় ঠিক করতে বিএনপি সিনিয়র নেতারা ইতিমধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে করনীয় নিয়ে দলের বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের মত আসছে। এসব মতামত বিশ্লেষণ করে দলের নীতিনির্ধারকদের পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

বিএনপির আগামীর ভাবনা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে সামনে পথ চলতে হবে। ভোটে কী হয়েছে তা সবারই বিষয়টি জানা। এজন্য নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সামনে একমাত্রই লক্ষ্য হচ্ছে দলকে গোছানো।

একই বিষয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলাদেশের খবরকে বলেন,  রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যাবহার করে নির্বাচনের নামে যে ভোট ডাকাতি হয়েছে সেগুলো দেশবাসীর সামনে তুলে ধারতে চায় বিএনপি। এছাড়া সংগঠন যে খুব গুছালো অবস্থায় আছে তা বলা যাবে না। এজন্য সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করার কাজ শুরু করা হবে শিগগিরই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads