আর মাত্র তিন গোল হলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলবেন তার দেশের কিংবদন্তি ইউসেবিয়ো দ্য সিলভাকে। হ্যা, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কথাই বলছি। প্রথম ম্যাচে স্পেনের বিরুদ্ধে তার দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ম্যাচ ড্র করেছিল পর্তুগাল। বুধবার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে মরক্কোর বিরুদ্ধেও ফের হ্যাটট্রিক করলে বিশ্বকাপের প্রথম ফুটবলার হিসেবে পর পর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করবেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। একই সঙ্গে গোলসংখ্যায় ছুঁয়ে ফেলবেন ইউসেবিয়োকেও।
গ্রুপ ‘বি’-র এই মরক্কো ম্যাচের আগে রোনালদো যদিও এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তবে পর্তুগালের আক্রমণ ভাগে রোনাল্ডোর সঙ্গী আন্দ্রে সিলভা বলছেন, ‘দুটো দলের শক্তির বিচারে মরক্কোর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী আমরা। যদিও তার মানে এই নয় যে, ম্যাচটা সহজ হবে। তবে রোনালদো যে বিধ্বংসী ছন্দে রয়েছে, তাতে ভাল কিছু আশা করা যেতেই পারে।’
পর্তুগাল অধিনায়ক মুখে কিছু না বললেও ইনস্টাগ্রামে একটি এনিমেটেড ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, ফ্রি-কিক মারার সময় তিনি কী রকম ইতিবাচক মেজাজে থাকেন। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে দুটি রোনালদোকে। একজন ইতিবাচক মানসিকতার। তার নাম রোনাল্ডো। অন্যজন নেতিবাচক মানসিকতাপূর্ণ। তার নাম ‘রোনালডোন্ট’। সেখানেই দেখা গিয়েছে, ফ্রি-কিক মারার আগে রোনালদো বলকে বলছেন, নির্দিষ্ট কোণে হঠাৎ বাঁক খেয়ে গোলে ঢোকার জন্য। সেই সময়েই দেখা যায়, রোনালডোন্ট বলছেন, ‘সবাই দেখছে বলের সঙ্গে তুমি কথা বলছ। তোমার উপরে খুব চাপ। শটটা অন্য কাউকে নিতে বলো। তুমি মেরো না।’ এরপরেই দেখা যায়, সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে রোনালডোন্টের কথা না শুনে গোল করলেন রোনালদো।
অনুশীলনের পরে অধিনায়ককে নিয়ে দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র বের্নার্দো সিলভা বলছেন, ‘কিছু ফুটবলার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায়। কিন্তু রোনালদোর ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টোটাই হচ্ছে। যত বয়স হচ্ছে ততই ক্ষুরধার হচ্ছে ওর খেলা। আশা করছি, আগামী কয়েকটা ম্যাচেও একই ছন্দে থাকবে।’
বিশ্বকাপে এর আগে ১৯৮৬ সালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। সেই ম্যাচ ৩-১ জিতেছিল আফ্রিকার দলটি। এবার প্রথম ম্যাচে ইরানের কাছে শেষ মুহূর্তের আত্মঘাতী গোলে হারতে হয়েছে মরক্কোকে। আফ্রিকার দলটির মাঝমাঠের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ফয়সল ফায়ের বলছেন, ‘প্রথম ম্যাচে শেষ মুহূর্তের গোলে হারলেও আমরা কিন্তু টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাইনি।’
বুধবার পর্তুগালের কাছে হারলেই পরের রাউন্ডে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে যাবে মরক্কোর। তাই কোনোভাবেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে বিপজ্জনক হতে দিতে চান না মরক্কোর কোচ হার্ভ রেনার্ড। দলের ডিফেন্ডার মানুয়েল দ্য কোস্তা বলছেন, ‘রোনাল্ডোর উপর বেশি নজর না দিয়ে, নিজেদের রক্ষণ সংগঠন নিখুঁত করতে হবে আমাদের।’