• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
লাওসকে হারিয়ে শুরু বাংলাদেশের

লাওসের বিরুদ্ধে জয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শুভ সূচনা, উল্লসিত বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফুটবল

লাওসকে হারিয়ে শুরু বাংলাদেশের

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০২ অক্টোবর ২০১৮

জয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শুভ সূচনা করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শক্তিশালী লাওসের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের স্বস্তির জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের পথ অনেকটাই পরিচ্ছন্ন করেছে লাল-সবুজরা। বিপলু আহম্মেদের দেওয়া একমাত্র গোলে প্রথমবারের মতো এশিয়ার এ দেশটির বিরুদ্ধে জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। এর আগে দুইবারের লড়াইয়ে এক ম্যাচে হার আর এক ম্যাচে ড্র ছিল লাল-সবুজদের। আগামী ৫ অক্টোবর একই ভেন্যুতে গ্রুপের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ফিলিপাইনের মুখোমুখি হবে স্বাগতিকরা। ওই ম্যাচে ড্র করলেই শেষ চারে নাম লেখানোর সুযোগ থাকবে জেমি ডের শিষ্যদের। এ আসর দিয়ে গত মাসে সাফ ফুটবলের দুঃখ ঘোচাতে মরিয়া এখন টিম বাংলাদেশ।

ম্যাচের আগের রাতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মাঠ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে জেলা স্টেডিয়ামের মাঠে খেলা শুরু হলেও মাঠ ছিল ভীষণ স্লো। বল পড়েই থেমে যাচ্ছিল। তাই উভয় দলের ফুটবলারদেরই বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে বেগ পেতে হচ্ছিল। পিচ্ছিল মাঠের কারণে বার বার পড়ে যাচ্ছিলেন ফুটবলাররা। এমন বিপত্তির পরও শুরুতেই লাওসের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন জামাল-সুফিল-জীবনরা। ১১ মিনিটেই সফরকারীদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তারা। ওয়ালি ফয়সালের লম্বা থ্রু পাস ধরে নাবীব নেওয়াজ জীবন লাওসের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান পায়ের জোরালো শট নেন। কিন্তু সাইডবার ঘেঁষে বল বাইরে চলে যাওয়ায় হতাশ হতে হয়। তিন মিনিট পরই স্বাগতিকদের রক্ষণ দেয়ালে চিড় ধরিয়ে পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করে নিয়েছিল লাওস। তবে ভাগ্য সহায় ছিল না তাদের। ডানদিক থেকে মিডফিল্ডার চানথাফুনের ক্রসে বক্সের ভেতর থেকে সুকচিন্দা হেড নিলেও তা ঠিকানা খুঁজে পায়নি। আক্রমণের ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ২২ মিনিটে আবারো গোলের চেষ্টা করেছিলেন জেমি ডের শিষ্যরা। কিন্তু ডানদিক থেকে বিপলু আহম্মেদের দারুণ এক ক্রসেও প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নিতে পারেননি রবিউল। দুই মিনিট পরই একক প্রচেষ্টায় গোল করতে গিয়ে ব্যর্থ হন সুফিল। তার পাশেই ফাঁকায় দাঁড়ানো ছিলেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। তাকে বল দিলেই হয়তোবা গোলের দেখা তখনই পেয়ে যেত বাংলাদেশ। ৩৬ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে লাওসের মিডফিল্ডার বাউনফাচান বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোলমুখে শট নিলেও গোলরক্ষক আশরাফুলকে ফাঁকি দিতে পারেননি। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বল লুফে নেন তিনি।

প্রথমার্ধে গোল না পেলেও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ শিবির। আক্রমণে কোণঠাসা করে ফেলে সফরকারীদের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন সুফিল। ডানদিক থেকে ওয়ালি ফয়সালের বল ধরে বক্সের ভেতরে ফাঁকায় দাঁড়ানো সুফিলকে পাস দেন জীবন। দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে সুফিল লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন। দুই মিনিট পরই লাওসের স্ট্রাইকার সুকচিন্দার শট ক্রসবারের ওপরে দিয়ে চলে গেলে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা। অবশেষে ম্যাচের ৬০ মিনিটে ১৬ কোটি বাঙালিকে আনন্দের বন্যায় ভাসিয়ে দেন বিপলু আহম্মেদ। জটলার মধ্যে ডান পায়ের আলতো টোকায় নিশানা ভেদ করেন তিনি। নাবীব নেওয়াজ জীবনের হেড লাওসের গোলরক্ষক সায়মানুলিনের হাত স্পর্শ করে ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে ব্যর্থ হন এক ডিফেন্ডার। ডানদিকে দাঁড়ানো বিপলু জটলার মধ্যে বল পেয়ে আলতো টোকায় গোল আদায় করে নেন (১-০)। সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার পঁচিশেক দর্শক। লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে আর ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে গোল উৎসব করেন তারা। বিপলু দৌড়ে গিয়ে মাঠের দক্ষিণ পাশে অবস্থানকারী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করেন। শেষদিকে আরো কয়েকবার লাওসের দুর্গে আঘাত হানলেও ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন বাংলার দামাল ছেলেরা।

এ ম্যাচ দিয়েই জাতীয় দলে অভিষেক হয় রবিউল ও ইব্রাহীমের। এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি আসরের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads