• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

এশিয়া

সেনা সরকারের পতন চায় সু চির সমর্থকরা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মিয়ানমারের সেনা সরকারের বিরুদ্ধে আরো কঠোর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ চায় দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সমর্থকরা। সম্প্রতি মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও এটি যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সমর্থকরা। সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ও নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডির বড় ধরনের জয়কে স্বীকৃতি দিতে বাহিনীটিকে বাধ্য করতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন তারা। খবর রয়টার্সের।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এই সামরিক অভ্যুত্থানে সু চিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সু চি ছাড়াও ২৬০ জনেরও বেশি অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ২০০৭ সালের ‘জাফরান বিপ্লবের’ পর দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সু চির সমর্থক মো থাল (২৯) বলেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে যখন আমরা প্রতিটি দিন আর প্রতিটি রাতে ভুগছি তখন এর চেয়েও বেশি পদক্ষেপের আশায় আছি আমরা। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এর অবসান চাই। মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও জেনারেলদের বিরুদ্ধে আরো শাস্তি ও পদক্ষেপ সম্ভবত দরকার।

রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী আরেক দফা ধরপাকড় চালিয়েছে। সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কিউয় টিন্টসহ দলের চারকর্মীকে রাতে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ক্ষমতা দখলকারী সেনা সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার কিউয় টিন্ট সুই সু চির স্টেট কাউন্সিলর অফিসের মন্ত্রী ছিলেন। এর বাইরে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত একজন চিকিৎসক রয়েছেন যিনি ক্রমবর্ধমান আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। কিছু এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে গ্রেপ্তাদের ধরে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক জানিয়েছে, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ‘ভুল তথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে’ তাই তাদের পরিচালিত বিষয়বস্তুগুলোর দৃশ্যমানতা ছেঁটে দিচ্ছে তারা। পাশাপাশি মিয়ানমারের সরকারি সংস্থাগুলোর ‘বিষয়বস্তু সরানোর’ অনুরোধ পাঠানোর সুযোগও স্থগিত করবে বলে জানিয়েছে ফেসবুক।   ওয়াশিংটন তাদের প্রথম ধাপের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারা তাদের দেশগুলোকেও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, সু চির সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের ঘটনায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে তারা।

গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছিল ৩৪৬টি আসন। সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ৭১টি আসনে জয় পায়। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ইউএসডিপি ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

গত পয়লা ফেব্রুয়ারি নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরুর দিন ভোরে অং সান সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। পরে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে ফের নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দেয় সামরিক জান্তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads