• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ক্রিকেট

লিটন-মিরাজে ওপেনিং মুগ্ধতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এশিয়া কাপের ফাইনালে ওপেনিং জুটিতে চমক থাকছে। ম্যাচের আগে এমন আভাস দিয়েছিলেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। চমক থাকল বটে। লিটন দাসের সঙ্গে সবাইকে অবাক করে মাঠে নামলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মজার ব্যাপার হলো, ওপেনিংয়ে ব্যাট হাতে দুজনে উপহার দিলেন দারুণ এক জুটির। যা এক অর্থে রাজ্যের স্বস্তির। কারণ এশিয়া কাপে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে বড্ড ঝামেলায় ছিল বাংলাদেশ। কোনো জুটিই থিতু হতে পারেনি। অবশেষে ফাইনাল ম্যাচে লিটন ও মিরাজের ১২০ রানের জুটি বুলিয়ে দিল একরাশ প্রশান্তি। যা ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ড।

শুধু তাই নয়, ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লিটন দাস ঘুচিয়েছেন রানের বন্ধ্যত্ব। দূর করেছেন রাজ্যের সমালোচনা। ব্যাট হাতে প্রথমবারের মতো পেয়েছেন আরাধ্যের সেঞ্চুরির দেখা। মজার বিষয় হলো, এই লিটনের ওয়ানডেতে আগে সর্বোচ্চ রান ছিল ৪১। মানে কোনো ফিফটির দেখাই পাননি তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে করে বসলেন সরাসরি সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১২১ রানে বিদায় নেন লিটন। ১১৭ বলের ইনিংসে ছিল ১২টি চার ও ২টি ছক্কার মার। মিরাজ বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৩২ রানে।

ওপেনিংয়ে এশিয়া কাপের শুরুটা করেছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়ের ম্যাচে শূন্য রানে লিটনের বিদায়। হাতে ব্যথা পাওয়ার কারণে তামিমও ব্যাকফুটে। দুই দফায় মাঠে নেমে দুই রানে অপরাজিত। পরে আর খেলা হয়নি ম্যাচ। দেশে ফেরেন তামিম। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে লিটন দাসের সঙ্গী ছিলেন নবাগত নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে মিলে করেন ১৫ রান। লিটন ৬, শান্ত ৭। ওপেনিংয়ে হতাশা।

সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে লিটন ও শান্তই আবার ওপেন করলেন। এবারো ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। দুজনে মিলে করলেন ১৫ রান। সমান সাত করে ফেরেন লিটন ও শান্ত।

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে ওপেনিংয়ের হতাশা কাটাতে বাংলাদেশ থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয় ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। তবে নাটকীয় জয়ের ম্যাচে ওপেন করেন শান্ত ও লিটনই। এবার শান্ত ছয় রানে বিদায়। লিটন করলেন ক্যারিয়ার সেরা ৪১ রান। ইমরুল স্কোয়াডে থাকলেও নামলেন ছয় নম্বরে। সেখানে নেমেই থাকলেন ৭২ রানে অপরাজিত।

সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দলের ওপেনিংয়ে আবার রদবদল। এবার লিটন দাসের সঙ্গী সৌম্য সরকার। কিন্তু ভাগ্যের বদল হলো না। ৫ বল খেলে শূন্য রানে বিদায় নিলেন সৌম্য সরকার। ৬ রান করতে পারলেন লিটন। ওপেনিং জুটিতে এলো মাত্র ৫ রান।

ভারতের বিরুদ্ধে মহা গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে ওপেনিং জুটি পেছনের হতাশা কাটিয়ে আলোর দিশা দেবে, তা হয়তো ভাবেনি কেউ। তবে মিরাজের সঙ্গে জুটি বেঁধে খোলস ছেড়ে যেন বের হয়ে এলেন লিটন দাস। ভারতীয় বোলারদের থোড়াই কেয়ার করে ছুটে চললেন দুজন। রান আসতে লাগল তরতরিয়ে। যা ছিল রীতিমতো বিস্ময় জাগানিয়া। কারণ এশিয়া কাপে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত কয়েকটি উইকেট পতন ছিল নিয়মিত চিত্র। কিন্তু গতকাল সেই ধারা থেকে বের হয়ে আসেন লিটন ও মিরাজ। ভুবনেশ্বর, বুমরাহ, চাহালদের বোকা বানিয়ে ওপেনিং জুটি এগিয়ে চলে আত্মবিশ্বাসের গতিতে। শেষ পর্যন্ত এই জুটি বিচ্ছিন্ন হয় দলীয় ১২০ রানের মাথায়। ২০.৫ ওভারে কুলদিপ যাদবের বলে রাইডুর হাতে বন্দি মিরাজ। যাওয়ার আগে করে যান ৫৯ বলে ৩২ রানের ছোট্ট অথচ কার্যকরী ইনিংস। যার মধ্যে ছিল তিনটি চারের মার। তবে অপর প্রান্তে লিটন ছিলেন আত্মবিশ্বাসে তুঙ্গে। সেঞ্চুরি করেই মাঠ ছাড়েন তিনি।

তবে মিরাজের বিদায়ের পর বাংলাদেশ শিবিরে নেমে আসে বিপর্যয়। মাত্র ১৯ রানের ব্যবধানে হারায় তিন উইকেট। থিতু হওয়ার আগেই বিদায় নেন ইমরুল কায়েস (২), মুশফিকুর রহীম (৫) ও মোহাম্মদ মিঠুন (২)। বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ১৩৯। টিকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহও। দলীয় ১৫১ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন তিনি মাত্র ৪ রান করে। মানে মিডল অর্ডার ছিল চরম ব্যর্থ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads