• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
স্বপ্নভঙ্গ, তবে লক্ষ্যপূরণ এখনো বাকি

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেট

স্বপ্নভঙ্গ, তবে লক্ষ্যপূরণ এখনো বাকি

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ০৪ জুলাই ২০১৯

স্বপ্ন পূরণের জন্য চাই নিখাদ পারফরম্যান্স। একসঙ্গে গোটা দলের জ্বলে ওঠা। যাকে বলে টিম পারফরম্যান্স। সঙ্গে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে সোনায় সোহাগা। একসঙ্গে নানা প্রাপ্তির সুখকর অনুভূতি।  আর সেটা ক্রীড়া ক্ষেত্রের সব দলীয় ইভেন্টেই। চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। মানে, সেমির আশা শেষ। রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচটি পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়মরক্ষার। কিন্তু ম্যাচটি কি আসলেই নিয়মরক্ষার? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

সে প্রসঙ্গে একটু পরে আসা যাক। তার আগে ভাগ্য নামক শব্দ ও টিম পারফরম্যান্স নিয়ে হোক মূল্যায়ন। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা বিশ্বকাপ এটি। ধারে-ভারে, গর্জনে, বিস্ময়ে- সব দিক থেকেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বিশ্বকাপ বাংলাদেশের জন্য নতুন মাইলফলকই বলা যায়। কিন্তু তারপরও থেকে যায় হতাশা, চাপা ক্ষোভ, কত ব্যাকুলতা। স্মরণীয় বিশ্বকাপে টিম পারফরম্যান্সের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। যা হয়েছে একজনের কাঁধে ভর করে। পরিস্কার করে বললে, ওয়ান ম্যান শো। তিনি সাকিব আল হাসান। এই সাকিবই প্রতিটি জয়ের ম্যাচের নায়ক। হারা ম্যাচেও সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে তার। বল হাতেও জাদুকরির ভূমিকায়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আলোয় টেনে আনার পথিকৃত মূলত এবার সাকিবই। তার তুলনায় বাকি সব ক্রিকেটাররা ছিলেন ম্লান। কী বোলিং, কী ব্যাটিং। দুই এক ম্যাচে মুশফিক কিংবা মোস্তাফিজের বোলিং নজড় কাড়লেও ধারাবাহিকতার ছিল চরম অভাব। শীর্ষ চারে যেতে হলে টিম পারফরম্যান্স খুবই জরুরি ছিল।

টিম পারফরম্যান্স যা ছিল তাতেও সেমিতে যাওয়া সম্ভব ছিল। যদি ভাগ্যটা একটু সুপ্রসন্ন হতো। কেন ভেসে যাবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ? কেন ওভাবে শেষ দিকের ভুলে হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। এই দুটি ম্যাচে জয় আসলে তো দোর্দণ্ড দাপটেই শাসন করা যেত বিশ্বকাপ। কিন্তু প্রকৃতির ওপর হাত নেই কারো। আবার হেরে যাওয়া ম্যাচে আক্ষেপ করা ছাড়া কীই-বা করার আছে।

সেমিতে ওঠার আশা পূরণ হয়নি। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনও শেষ। তা বলা যায়। কিন্তু একটি জিনিস এখনো বাকি আছে। আর তা হলো লক্ষ্যপূরণ। বলা যেতে পারে, সেমিতে খেলাও তো লক্ষ্যপূরণ ছিল। সেটা তো হলো না। হ্যাঁ, ঠিক আছে। বাকিটা অন্য ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ আগামীকাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে জিতলে হবে সেই লক্ষ্যপূরণ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ৫টি জয়। শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, পাকিস্তানকে হারানো। সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের অন্তত একটিতে জয়।

সম্ভাব্য সেই পাঁচ জয়ের তিনটি ধরা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত। লক্ষ্য পূরণের শেষ ধাপ পাকিস্তানকে হারানো। যাতে শেষটায় জয়ের স্মৃতিটা থাকবে জ্বলজ্বলে। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় আরেকটি দিক থেকেও বেশ জরুরি। পয়েন্ট টেবিলের ৫ নম্বরে থাকা। নিজেদের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালে এবং পরদিন ভারতের কাছে শ্রীলঙ্কা হারলে বাংলাদেশই থাকবে পাঁচে। শীর্ষ চারের বাইরে এই অবস্থানগুলোর মূল্য হয়তো এমনিতে সামান্যই। তবে বিশ্বকাপের মতো আসরে বিরুদ্ধ কন্ডিশেনে পঞ্চম সেরা দল হতে পারলে, বাংলাদেশের জন্য সেই অর্জন কম কিছু হবে না। বিশ্বকাপে এক আসরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জয় ২০০৭ ও ২০১৫ আসরে, তিনটি করে। এবার তিনটি জয় পাওয়া হয়ে গেছে এর মধ্যেই। শেষ ম্যাচে হাতছানি নতুন রেকর্ডের।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ে সমাপ্তি, লক্ষ্যপূরণ সঙ্গে রেকর্ডও, এমনটি হলে কমই বা কিসের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads