• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
এই ধারা অব্যাহত থাকুক

ইনিংস ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডজের বিপক্ষে জয়

ছবি : ইন্টারনেট

সম্পাদকীয়

টাইগারদের ইনিংস ব্যবধানে সিরিজ জয়

এই ধারা অব্যাহত থাকুক

  • প্রকাশিত ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮

এমনও একটা সময় এসেছিল, যখন বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিল। এমনকি তা বাতিলের আলোচনা-সমালোচনাও বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনের অনেকেই করতে পিছ-পা হননি। ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে গত রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত করে বাংলার টাইগাররা তার সমুচিত জবাব দিল। শুধু তা-ই নয়, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে বাংলাদেশ দল সিরিজ জয় করল। এ জয়ের ভেতর দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটেও বাংলাদেশের ক্রিকেট তার ক্রমশ উন্নয়নের চিত্রসহ শক্তিমত্তার নতুন পরিচয় বিশ্বের সামনে মেলে ধরেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আমাদের অভিনন্দন।

দেশের ক্রিকেট এখন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পথ হাঁটতে শুরু করেছে, তেমনটি আমরা বলতেই পারি। কেননা ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি ওয়েলিংটন জয় অর্থাৎ ১০০তম টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সোনায় মোড়ানো একটি দিন। সেই বিজয় দেশের টেস্ট ভাবমূর্তিকেও দিয়েছে উজ্জ্বল মর্যাদা। সে বছরই ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ‘আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’তে সেমিফাইনাল খেলা এবং একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে ৭ নম্বরে অবস্থান করা আমাদের ক্রিকেট দলের বিরল যোগ্যতারই প্রমাণ।   

গত বছরই ইংল্যান্ডের ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল, ‘দলটি নজরকাড়ার মতো উন্নতি করেছে। তারা তাদের প্রাপ্য প্রশংসা কুড়িয়েছে।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই নজরকাড়া পরিবর্তন লক্ষ করা যায় অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপের আসর থেকে। এরপর ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টি কিংবা টেস্ট খেলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্ববাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। বিশেষ করে হোম সিরিজগুলোতে সফররত বিদেশি দলগুলোকে একে একে বধ করায় তারা নায়কে পরিণত হয়। কিন্তু ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। আবার ক্রিকেট ভদ্রলোকেরও খেলা। এই ভদ্রোচিত অনিশ্চয়তার খেলায় হার-জিত জানান দিয়ে আসে না। সুতরাং এক বছরের ক্রিকেট খেলায় ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি সিরিজ অথবা টেস্টে বিপর্যস্ত হওয়া মানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। তারই প্রমাণ আমরা বিভিন্ন সময় পেয়েছি। আজকের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধ সেই স্বীকৃতি বহন করে। এখন আগামী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল সরাসরি খেলবে একদিনের ক্রিকেট র্যাঙ্কিংয়ে ৭ নম্বর স্থান অর্জন করায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন দিন কি আগে কখনো দেখা গেছে? এর উত্তর না খুঁজেই বলা যায়, কখনো না। তবে হ্যাঁ, ক্রিকেটের বিশ্ব মোড়লরাও আজ শঙ্কিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই উত্থানে।

কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই ধারাবাহিক উন্নতি ধরে রাখতে হলে আমাদের ক্রিকেট বোর্ডকেও গ্রহণ করতে হবে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা। যার ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকার শেষ কথায় আসতে হয়, ‘বাংলাদেশের মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে তা কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই করেছে। তারা তাদের নেতাদের কাছ থেকে আরো ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য।’ সুতরাং আমরা আশা করি, সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ক্রিকেট বোর্ড যৌথ প্রক্রিয়ায় আগামী বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পরিচর্যায় মনোনিবেশ করবে। পাশাপাশি ক্রিকেটের সব স্তরে বাংলাদেশ দলের এই উন্নতির ধারা বজায় রাখতেও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads