• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

শিক্ষা

প্রাথমিকে রিভিউ হচ্ছে সিলেবাস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২১ মার্চ ২০২১

করোনার কারণে গত বছর থেকে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আসছে ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। তবে চলতি বছর তিন মাস পিছিয়ে পড়ায় প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক সিলেবাস রিভিউ করে কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। এছাড়া প্রথম সাময়িক পরীক্ষা বাতিলের চিন্তাভাবনা হচ্ছে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হতে পারে বলে। 

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ২০২০ সালের অধিকাংশ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। চলতি বছরও তিন মাস পরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হচ্ছে। যেহেতু আমাদের তিন মাস পার হয়ে গেছে এজন্য সিলেবাস কিছুটা রিভিউ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদ্যালয় খোলার পর প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন এবং পিইসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছয়দিন ক্লাস নেওয়া হবে। শিক্ষকরা ক্লাসে কি পড়াবেন, কীভাবে পড়াবেন, কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেবেন এ জন্য একটি লেসন প্ল্যান (পাঠ পরিকল্পনা) ও শিক্ষক নির্দেশিকা গাইড তৈরি করা হচ্ছে। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তককে (এনসিটিবি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্লাস শুরুর আগে পাঠ পরিকল্পনা ও নির্দেশিকার ওপর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। 

এক বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছরের পাঠ্যপুস্তকের কিছু অধ্যায় নতুন বছরের সিলেবাসে যুক্ত করা হচ্ছে। এ বছরের ক্লাস অনুযায়ী কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাদ দিয়ে পড়ানো হবে। এ সিলেবাস শেষ করে শিক্ষার্থীদের সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হবে। কীভাবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়ানো হবে সে বিষয়ে পাঠ পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করতে ছয় মাস পর পর বছরে দুটি সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। এসব পরীক্ষায় যারা পাস করে তাদের পরবর্তী ক্লাসে তোলা হয়। গত এক বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষা ছাড়াই তাদের অটোপাস দিয়ে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হয়। চলতি বছর ইতোমধ্যে তিন মাস পার হলেও এখনো স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আগামী ৩০ মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দেওয়া হলেও করোনার প্রাদুর্ভাব ফের বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যালয় খুলে ক্লাস নেওয়াটা নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিদ্যালয় খোলার তারিখ পিছিয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হলেও প্রথম সাময়িক পরীক্ষা না নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। শুধু দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হতে পারে।

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ পরিকল্পনা হিসেবে শিক্ষক নির্দেশনা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে ওরিয়েন্টশনের (কর্মশালা) আয়োজন করা হবে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সপ্তাহে একদিন কি পড়াবেন, পঞ্চম শ্রেণির পিইসি পরীক্ষার প্রস্তুতি কি হবে সেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ক্লাসে শিক্ষকরা সে বিষয়গুলো অনুসরণ করে পাঠদান করাবেন।

তিনি বলেন, জাতীয় শিশু একাডেমি (নেপ) ও এনসিটিবি যৌথভাবে এ ওরিয়েনটেশনের কাজটি করবে। শিক্ষক নির্দেশিকায় একজন শিক্ষক করোনা পরবর্তী সময়ে কীভাবে ক্লাসে পড়াবেন তার একটি গাইডলাইন থাকবে। সেখানে বিষয়ভিত্তিকভাবে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হবে শিক্ষক ক্লাসে কোন অধ্যায়গুলোকে গুরুত্ব দেবেন এবং তা কিভাবে পড়াবেন। একই সঙ্গে একটি সাবজেক্টের (বিষয়) বেশি প্রয়োজনীয় নয় এমন বিষয়গুলো না পড়িয়ে রিলেটেড একটি অধ্যায়ের সঙ্গে অন্য অধ্যায়ের কাছাকাছি আছে এমন বিষয়কে এক সঙ্গে পড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম বলেন, আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছর সিলেবাসের অনেক বিষয় পড়ানো সম্ভব হয়নি। গত বছরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় চলতি বছর যুক্ত করা হচ্ছে। তবে তিন মাস ক্লাস না হওয়ায় চলতি বছর প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads