• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
শিশুর পুষ্টিহীনতার জন্য কৃমিও দায়ী

ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য

শিশুর পুষ্টিহীনতার জন্য কৃমিও দায়ী

  • প্রকাশিত ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

কৃমির কারণে শরীরে ভিটামিন ‘এ’ কম শোষিত হয়, ফলে ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন— ত্বক, অন্ত্রের এপিথেলিয়াম ও চোখের ক্ষতি হয়। প্রচুর কৃমি একসঙ্গে জমাট বেঁধে অন্ত্রের নালি বন্ধ করে দিতে পারে। বিভিন্ন জাতের কৃমি শিশুর শরীরে নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। শিশুর কৃমির লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— খাওয়ার অরুচি, আয়রনের ঘাটতি ও রক্তশূন্যতার জন্য দুর্বলতা, বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া এবং অপুষ্টিতে ভোগা, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া। কৃমির কারণে অ্যালার্জি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, কফ-কাশি হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কৃমি, বিশেষ করে গোল কৃমি পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় ও এপেনডিক্সে অবস্থান নিয়ে সংক্রমণ ঘটায় ও তীব্র ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে। শরীরের নানা অঙ্গে কৃমি মরে গিয়ে স্টোন জমার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিছু কৃমি লিভারেরও ক্ষতি করে। চোখের ক্ষতি করে লোয়া লোয়া।

কৃমির সংক্রমণ হলে আপনি সন্তানকে যাই খাওয়ান না কেন তার একটা বড় অংশ কৃমির পেটে চলে যাবে। তবে পেটে ব্যথা মানেই কিন্তু কৃমি নয়। দাঁত কটমট করা, লালা পড়া ইত্যাদি হলেই যে কৃমি হবে তা নয়। একজন ডাক্তারই কৃমি ভালো শনাক্ত করতে পারবেন। তবে লক্ষণগুলো জানা থাকলে আপনিও লাভবান হবেন। কারণ যত আগে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার সন্তানের জন্য ততই মঙ্গল।

দুই বছরের পর থেকে সবার জন্য কৃমির ওষুধের ডোজ একই অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ ওষুধ খাবেন আপনার আড়াই বছরের শিশুও একই পরিমাণ ওষুধ খাবে। তাই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না। বাড়ির সবার একসঙ্গে কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত, এতে কৃমি থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। সুস্থ মানুষ বা শিশু যদি ৪ থেকে ৫ মাস পর পর কৃমির ওষুধ খান তবে কোনো ক্ষতি হয় না। আজকাল দুই বছরের কম বয়সের শিশুরও কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যায়, তবে তার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শিশু সুতা কৃমি বাদে অন্য কৃমিতে আক্রান্ত হলে মেবেনডাজল ১০০ মিলিগ্রামের একটি বড়ি ১২ ঘণ্টা পরপর তিন দিন বা অ্যালবেনডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম একটি বড়ি বা পিপেরাজিন ৪ গ্রাম একটি বড়ি খাওয়াতে হবে। সুতা কৃমি হলে মেবেনডাজল ১০০ মিলিগ্রাম বা অ্যালবেনডাজল ৪০ মিলিগ্রাম বা পিপেরাজিন ৪ গ্রাম একটি বড়ি খাওয়াতে হবে। এর দুই সপ্তাহ পর আরো একটি বড়ি খাওয়াতে হবে। কৃমির ওষুধের জন্য শীত বা গ্রীষ্ম কোনো ব্যাপার নয়। যে কোনো সময়ই খাওয়ানো যায়, এতে শিশুর কোনো ক্ষতি হয় না।

ডা. আবু সাঈদ শিমুল

শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads