• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
টিকা রপ্তানিতে বাধা নেই: সেরাম

সংগৃহীত ছবি

ভারত

টিকা রপ্তানিতে বাধা নেই: সেরাম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ জানুয়ারি ২০২১

টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, ভারত থেকে সব দেশেই ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমোদন আছে। গতকাল মঙ্গলবার টুইট করে এ কথা জানান তিনি। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান টুইটে লিখেছেন, যেহেতু সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তাই তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করছেন। এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেছেন, ভ্যাকসিনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের শীর্ষ পর্যায় অবগত আছেন। আশা করি ভ্যাকসিন পেতে দেরি হবে না।

স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে ভারত সরকার বলেছে শুধুমাত্র কর্মাশিয়াল অ্যাক্টিভিটিজের ওপর, আমাদেরগুলোর ওপর না। কারণ আমাদেরটা সরকার টু সরকার।  যদিও ভ্যাকসিন জিটুজি (দুই সরকারের মধ্যে) পর্যায়ে না বেসরকারিভাবে আসবে, সেটা কোনো বিষয় নয়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা মিলে করোনার যে টিকা তৈরি করেছে, তার উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। কোভিশিল্ড নামের ওই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত সোমবার ই টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনও দেয়। বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোভিশিল্ড ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার এক মাসের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকার প্রথম চালান পাঠানোর কথা সেরাম ইনস্টিটিউটের।

ভারত গত রোববার সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত টিকা ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে বাংলাদেশেও তা দ্রুত পাওয়ার আশা তৈরি হয়। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহীর বরাত দিয়ে রোববার রাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রপ্তানি শুরুর আগে আগামী দুই মাস তারা ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতেই জোর দেবে। ওই খবরে বাংলাদেশের টিকা পাওয়া বিলম্বিত হতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়।

এ প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান সোমবার দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বেক্সিমকো, ফরেন মিনিস্ট্রি ও ভারতের মিশনের সাথে আলোচনা হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তা ব্যাহত হবে না। কোনো সমস্যা হবে না, আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি হয়েছে সেটি পালন করা হবে। ওরা বলেছে ভ্যাকসিনের বিষয়ে অন্য ব্যান (নিষেধাজ্ঞা) থাকতে পারে। কিন্তু যেহেতু একদম উচ্চ পর্যায়, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আলাপ করে এটা হয়েছে, কাজেই বাংলাদেশ প্রথম ভ্যাকসিন পাবে। কোনো ধরনের ব্যান এখানে কার্যকর হবে না। ভারত যখন করোনার ভ্যাকসিন পাবে, একই সময়ে বাংলাদেশকেও ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে সেরাম ইনস্টিটিউট।

টিকা রপ্তানিতে যে নিষেধাজ্ঞা নেই, সিরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেনও সে কথা গত সোমবার বিবিসিকে বলেন। তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকা রপ্তানির ওপর ভারত সরকারের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সেরাম ইনস্টিটিউট এখনো টিকা রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে- যা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads