জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিলের শুনানিতে তার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান বলেছেন, ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাব ও নথিপত্রে খালেদা জিয়ার নাম নেই। মামলার প্রথম সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ছাড়া আর কোনো সাক্ষী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু বলেননি।

গতকাল রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এ আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। শুনানিতে আবদুর রেজ্জাক খান মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি ও আংশিক জেরা পড়েন। আজ সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আপিলের শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।

বেলা ২টায় আপিলের শুনানি শুরু হলে খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, এ আপিলের পেপারবুক অসম্পূর্ণ। এ অবস্থায় মামলার শুনানি করা সম্ভব নয়। তখন আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। খুরশীদ আলম বলেন, তারা যে কারণ দেখিয়ে পেপারবুককে অসম্পূর্ণ বলছেন তা পেপারবুকে আছে। তখন আদালত সেগুলো দেখাতে বলেন। কিন্তু তিনি সূচিতে তা দেখাতে পারলেও মূল কাগজপত্রে দেখাতে পারেননি। এরপর আদালত খুরশীদ আলম খানকে আজ সোমবার এগুলো দেখাতে বলেন। এরপর আদালত পেপারবুক থেকে প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়তে বললে এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ছাড়া কীভাবে আমরা শুরু করব?

এ সময় আদালত বলেন, এখানে এগুলো দরকার নেই। শুরু করুন। অবশ্যই আপনারা এসব পাবেন।

এরপর এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, অসম্পূর্ণ পেপারবুক নিয়ে আমরা কী করে শুনানি করতে পারি?

এ সময় আদালত শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী আহসান উল্লার উদ্দেশে বলেন, আপনি কি প্রস্তুত? প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়বেন। আহসান উল্লা বলেন, রাজনৈতিক মামলা। তারা আগে শুরু করুক।

জবাবে আদালত বলেন, কোনো মামলা রাজনৈতিক নয়।

এরপর এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের জোর করা হয়েছে। এরপর আবদুর রেজ্জাক খান মামলার প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়া শুরু করেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, আমিনুল ইসলাম, মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা, মনির হোসেন, নওশাদ জমির, রাগীব রউফ চৌধুরী, আইয়ুব আলী আশ্রাফী প্রমুখ। আর সরকারপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিলের শুনানি শুরু হয়। ওইদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন আদালত। ওইদিন একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের জন্য আদালতে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।