• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
গ্রামে হবে নগর সুবিধা

মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৮ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

প্রতীকী ছবি

জাতীয়

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি গুরুত্ব পাচ্ছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়

গ্রামে হবে নগর সুবিধা

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ৩০ জুন। সময়ের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৮ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম থেকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে। মোট প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত করা, প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার মতো সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্য থাকবে নতুন পরিকল্পনায়। নির্বাচনী ইশতেহারের পাশাপাশি সরকারের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ভিশন-২০৪১ সামনে রেখে নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শেষ হওয়া ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্য থাকবে নতুন পরিকল্পনায়। নতুন পরিকল্পনায় উচ্চপ্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন, আয়বৈষম্য কমিয়ে আনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অর্জনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরির অংশ হিসেবে সামষ্টিক অর্থনীতির একটি রূপরেখা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এ লক্ষ্যে কোন বিষয়ে কী ধরনের গবেষণা করা হবে তাও চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মাসখানেকের মধ্যে একটি ধারণাপত্র উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ ধারণাপত্রের আলোকে নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করা হবে। জিইডি সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনার কাজ আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। এ পরিকল্পনায় গ্রামকে শহর বানানো সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। ফসল উৎপাদন, মাছ চাষের মতো কৃষি কাজের পাশাপাশি সব শ্রেণি ও মানুষের জন্য পল্লী অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে পরিকল্পনার আওতায়। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মতো গ্রামগুলোকে সাজানো হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও উন্নত শিক্ষার পরিকল্পনায়।

জানতে চাইলে জিইডির সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সর্বশেষ দুই পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সরকারের ভিশন-২০২১ অর্জনে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যপূরণে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ভিশন-২০৪১ অর্জনে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রণয়ন করা হচ্ছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। একাদশ নির্বাচনে সরকারি দলের প্রতিশ্রুতি পূরণেরও প্রচেষ্টার ছাপ থাকবে পরিকল্পনাটিতে। তবে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে অবকাঠামো খাতে উন্নতির পাশাপাশি আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন হবে। প্রক্রিয়াধীন পরিকল্পনায় এসব বিষয়ে সুপারিশ থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ পূরণের প্রচেষ্টা থাকবে বলেও তিনি মনে করেন।

এ অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, উৎপাদনমুখী শিল্পায়ন নিশ্চিত হলে কর্মসংস্থান ও আয় বাড়বে। আর বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষার সুযোগ বিস্তৃত করতে পারলেই পল্লী অঞ্চলে শহরের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ লক্ষ্য পূরণে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিকেন্দ্রীকরণের সুপারিশ থাকবে বলেও জানান ড. শামসুল আলম।

সূত্র জানায়, গত মাসের শেষের দিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বৈঠকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে গতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন মন্ত্রী। শহরের সব সুবিধা গ্রামে পৌঁছানের ক্ষেত্রে সহায়ক প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, শহরের সুবিধা গ্রামে নিয়ে আসার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামীতে কর্মসংস্থানের জন্য গ্রামের মানুষকে শহরে আসতে হবে না। পরিকল্পনা সফল হলে শহরগুলোর ওপর চাপ কমবে।

জিইডি সূত্র জানায়, আগামী পাঁচ বছরে দেড় কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল ও কর্মসূচি থাকবে নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়। একই সঙ্গে আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা, আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস, উৎপাদনমুখী শিল্পোন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থাকবে পরিকল্পনায়। বিভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য পরিকল্পনাটির মূল্যায়নও করা হবে বিভিন্ন সময়ে।

 

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads