• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ আগস্ট ২০১৯

জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্টের আজ মঙ্গলবার ষষ্ঠ দিন। বাঙালির  জীবনে আগস্ট শুধু শোকের নয়, একটি অভিশপ্ত মাসও বটে। কারণ, এ মাসেই ঘটেছিল বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম, ঘৃণ্য ও কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর কলঙ্কজনক ট্র্যাজেডি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ঘাতকদের হাতে এ মাসের ১৫ তারিখ পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া) নিহত হয়েছিলেন জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে জাতি পিতৃহন্তারকের বিচারের রায় কার্যকরের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হলেও প্রতিটি শিরা-উপশিরা ও ধমনিতে তীব্র ঘৃণার উদ্রেক করে এ মাস।

প্রতিবছরের মতো এবারের শোকের মাসে প্রথম দিন থেকেই দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের পথঘাটে, পাড়া-মহল্লায় ও সভা-সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান, মিছিল-স্লোগান ও তার ভাষণ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। রাস্তাঘাট, সেতু ও অলিগলি পর্যন্ত ছেয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাপানো কালো ব্যানার, পোস্টার আর প্ল্যাকার্ডে। লাল, সাদা আর কালো কালিতে লেখা শোকবাণী ছড়াচ্ছে শোকের ছায়া। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সব বাঙালির হূদয়ে তার স্মৃতি যে অমলিন, শোকের মাস আগস্টে প্রতিটি স্থানে তার প্রতিফলন ঘটছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১ আগস্টের প্রথম প্রহর থেকে প্রায় প্রতিদিনই সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিমসহ এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, শোক ও ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করছে।

‘মুজিবের বাংলায়, ঘাতকদের ঠাঁই নাই’-এ স্লোগানে এখন মুখরিত গোটা দেশ। রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসছে ততই অসংখ্য কর্মসূচির মাধ্যমে শোকাহত কৃতজ্ঞ জাতি বঙ্গবন্ধুর পলাতক ঘাতকদের ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠছে। শোকের প্রতিটি অনুষ্ঠানই পলাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবিতে উচ্চকিত।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়স্বজন।

বঙ্গবন্ধু শুধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিই নন, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। রাজনীতির মঞ্চে এসে এ মহানায়ক রাজনীতিবিদ থেকে হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের প্রতীক। প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের স্রষ্টা। তার দীর্ঘদিনের নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি অনুপ্রাণিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ তথা পাকিস্তানি আধিপত্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছে আমাদের স্বদেশ ভূমিকে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্যোক্তা বঙ্গবন্ধু মুজিব ছিলেন আদর্শে জাতীয়তাবাদী ও বিশ্বাসে গণতন্ত্রী। তাই তো তিনি কর্মী থেকে হয়েছেন নেতা আর নেতা থেকে হয়েছেন জননেতা এবং জননেতা থেকে হয়েছেন জাতির জনক। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে একটি দলের নেতা থেকে হয়েছেন দেশনায়ক।

সেই কালজয়ী মানুষকেই এক দিন, এই আগস্টেই নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। তার রক্তে রঞ্জিত হয় বাংলার পবিত্র মাটি। বাঙালির ইতিহাসে যোগ হয় এক কলঙ্কময় অধ্যায়। যে বিশাল হূদয়ের মানুষকে কারাগারে বন্দি রেখেও স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতেই তাকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সেই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আজও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি ৪৪টি বছর বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন তার সুযোগ্য উত্তরাধিকারিণী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads