• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
দুই সপ্তাহে বন্ডের দুই হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রত্যাশা আইসিবির

রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)

ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংক

দুই সপ্তাহে বন্ডের দুই হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রত্যাশা আইসিবির

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার পর আগামী দুই সপ্তাহে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে দুই হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। অর্থ সংগ্রহে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মজিব উদ্দিন আহমেদ। আইসিবির বন্ডটি অনুমোদনের পাশাপাশি এ বন্ডে বিনিয়োগ বাণিজ্যিক ব্যাংকের পুঁজিবাজার এক্সপোজারে অন্তর্ভুক্তি থেকে অব্যাহতির বিষয়েও সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে অর্থ সংগ্রহ আরো সহজ হয়েছে বলে মনে করে আইসিবি।

তারল্য সঙ্কট মোকাবেলা ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে আইসিবির পর্ষদ ২ হাজার কোটি টাকার সাত বছর মেয়াদি পূর্ণ অবসায়নযোগ্য সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়। আর গত জুলাইয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইসিবিকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এ বন্ড ইস্যুর অনুমোদন দেয়।

আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মজিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারকে সমর্থন দিতে আইসিবি দুই হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর উদ্যোগ নিয়েছে। আর এ বন্ডে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে সব ধরনের এক্সপোজারের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার একটি আবেদন আইসিবির পক্ষ থেকে করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টিতে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় আমরা আশা করছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অ্যারেঞ্জার আইসিবির হাতে দুই হাজার কোটি টাকার তহবিল তুলে দিতে পারবে। এ অর্থ বিনিয়োগ করে আইসিবি পুঁজািবাজারকে একটি ভালো সাপোর্ট দিতে পারবে।

কুপন বিয়ারিং নন-কনভার্টেবল আইসিবির বন্ডটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যুকৃত এ বন্ড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে না। বন্ডটির অভিহিত ও ইস্যু মূল্য ইউনিটপ্রতি এক কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি বিনিয়োগকারী ন্যূনতম এক কোটি টাকায় একটি বন্ড কিনতে পারবে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সর্বনিম্ন পাঁচটি বন্ড ৫ কোটি টাকায় কিনতে পারবে। দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সাত বছর মেয়াদি এ বন্ডের সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ। তবে বিলম্বিত অবসায়নের ক্ষেত্রে বার্ষিক অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হবে। হস্তান্তরযোগ্য এ বন্ডের সুদ ছয় মাস ভিত্তিতে পরিশোধ করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার পর এ বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকগুলোর সব ধরনের এক্সপোজারের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতির বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে। গত বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আইসিবির সাত বছর মেয়াদি ২ হাজার কোটি টাকার সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডের অর্থ স্থিতিশীল ও দক্ষ বাজার গঠন, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ, উন্নত ও টেকসই বন্ড বাজার উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে। তাই এ বন্ডে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকে একক গ্রাহক ঋণসীমা ও পুঁজিবাজার এক্সপোজারে অন্তর্ভুক্তি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছে আইসিবি। বন্ডে বিনিয়োগ হওয়ায় একক গ্রাহক ঋণসীমার বিষয়টি এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অন্যদিকে ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোজার থেকে অব্যাহতি দিতে চাইলে এ বিষয়ে সরকারের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। গভর্নরের অনুমোদনক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মতি চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আইসিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যমান আইন অনুসারে বন্ডে বিনিয়োগ করলে সেটি ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে। এতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমার বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক ব্যাংকই আইসিবির বন্ডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না। এ কারণে ব্যাংকগুলো যাতে নির্দ্বিধায় বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে, সেজন্য আইসিবির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বন্ডে বিনিয়োগকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য না করার আবেদন করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর থেকেই বড় ধরনের তারল্য সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে আইসিবি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা একক গ্রাহক ঋণসীমা-সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সে সময় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আইসিবি থেকে বড় অঙ্কের আমানত প্রত্যাহার করে নেয়। এ অর্থ ফেরত দিতে গিয়ে আইসিবিকে তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে হয়, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারে। এতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা রক্ষায় আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যায়। এখন বন্ডের অর্থে আইসিবি পুঁজিবাজারে তাদের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads