• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
মোবাইল ব্যাংকিং চার্জ ১০ শতাংশ করার দাবি

ফাইল ছবি

ব্যাংক

মোবাইল ব্যাংকিং চার্জ ১০ শতাংশ করার দাবি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০২১

আসন্ন বাজেটে মোবাইলে আর্থিক সেবার চার্জ ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ ১১টি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা মহামারীর মধ্যে দেশের অর্থনীতির গতি চলমান রাখতে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত লেনদেন, ই-কমার্স পেমেন্ট, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, ট্যাক্স প্রদানসহ অন্যান্য সব সেবার বিল পরিশোধের পাশাপাশি পবিত্র রমজানের জাকাত প্রদান এমনকি ঈদ সালামি প্রদানেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে এমএফএস। মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, এই সেবায় দৈনিক লেনদেন হচ্ছে প্রায় ২২০০ কোটি টাকা। এখনো এ সেবার সামর্থ্যের ৬৫ শতাংশ ব্যবহূত হচ্ছে না। অর্থাৎ, ৬৫ শতাংশ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে রয়েছে। এমএফএস সেবায় নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি গ্রাহক। তবে সক্রিয় লেনদেনকারী সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সংখ্যা ৭০ শতাংশ। দেশে বর্তমানে ১৫টি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে এজেন্ট রয়েছে প্রায় ১০ লাখ ৪৪ হাজার। কিন্তু প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রান্তিক পর্যায়ে রিটেইলার বা এজেন্ট না থাকায় তাদের প্রদেয় সুবিধাদি এমনকি প্রতিযোগিতার কোনো সুফল প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাহক পাচ্ছে না। আমরা মনে করি, এ সেবার সামর্থ্যের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করলে দৈনিক লেনদেন ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ফলে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারবে। জিডিপিতে অংশগ্রহণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। তাই আসন্ন ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ওপর গুরুত্ব প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।

সংগঠনটির সভাপতি বলেন, এমএফএস সেবার সঠিক ব্যবহার বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে একদিকে যেমন জিডিপির অগ্রগতি হবে, তেমনিভাবে কর্মসংস্থানও বাড়বে। এ সেবার অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় হয়ে আছে এর গলাকাটা উচ্চ সার্ভিস চার্জ। আমরা এই সেবা চালুর পর থেকেই সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য সময়ে সময়ে সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছি। যদিও সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্ভিস চার্জ কমানোর কোনো উদ্যোগ আজ পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। তবে বাজার প্রতিযোগিতা রক্ষার স্বার্থে রাষ্ট্রীয় অংশীদারিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ কিছুটা হলেও সার্ভিস চার্জ কমিয়ে বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আশা রাখি, আগামী দিনে এই প্রতিযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে গ্রাহকেরা খুব দ্রুতই এর সুফল ভোগ করতে পারবে।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, এমএফএস সেবায় প্রতি হাজারে ভ্যাট-ট্যাক্স খরচসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় মিটিয়েও হাজারে ১০ টাকা চার্জ গ্রাহকপ্রতি ধার্য করতে হবে। বর্তমান কর হার পরিবর্তন করে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। সেন্ড মানি চার্জ সব অপারেটরকে শূন্য টাকায় নামিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, দৈনিক লেনদেনের পরও অপারেটরদের কাছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা সঞ্চিত থাকে। এই টাকা অপারেটররা কলমানি মার্কেটে বিনিয়োগ করলেও সেই বিনিয়োগের লভ্যাংশ গ্রাহকরা পায় না। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে গ্রাহকের সঞ্চিত অর্থের ওপর লাভ প্রদান করতে হবে। কিন্তু দুই-একটি প্রতিষ্ঠান কিঞ্চিৎ পরিমাণ লাভ দিয়ে থাকে, আমরা চাই আসন্ন বাজেটে এই বিনিয়োগ ও গ্রাহকের লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হবে। অপারেটরদের করপোরেট ট্যাক্স কমিয়ে আনতে হবে। বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টির লক্ষ্যে করপোরেট ট্যাক্স কমিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। ভ্যাটসহ কোন সেবার চার্জ কত টাকা কাটা হয়েছে, তা প্রতি লেনদেনের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহককে জানানোর কথা থাকলেও, দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে তা জানায় না। এ ধরনের নির্দেশনার অমান্যের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা যায়, সেই নির্দেশনা আসন্ন বাজেটে থাকা জরুরি।

তিনি বলেন, এমএফএস সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগকারী কারা এবং বিনিয়োগের পরিমাণ কত তা বাজেটে স্পষ্ট উপস্থাপন করতে হবে। আন্তঃলেনদেনের চার্জ শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকের অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চিয়তা প্রদান করতে হবে। নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে, এমন নির্দেশনা বাজেটে আমরা প্রত্যাশা করি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads