• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪২৯

ক্যাম্পাস

অটোপাস চায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ অক্টোবর ২০২০

করোনা মহামারীর কারণে বড় দুই পাবলিক পরীক্ষা (জেএসসি-জেডিসি ও এইচএসসি) বাতিল করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে, তা নিয়ে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ২৯ লাখ ১০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার কারণে তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।  অনেক শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী পরীক্ষা বাতিলের দাবি তুলেছেন। তাদের মতে, ইতোমধ্যে ৬ মাস পার হয়ে গেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের চাকরির বয়স নিয়েও শঙ্কিত। এ কারণে ক্লাস মূল্যায়ন করে অটো পাসের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন এগিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, মহামারীজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কোনো ধরনের লেখাপড়া করতে পারছেন না। সময় কাটছে বিভিন্নভাবে। যারা পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ করেছেন তারাও পরীক্ষা দিতে পারেননি।  ফলে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এদিকে বয়সও পেরিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে তারা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এজন্য বিকল্প মূল্যায়নের মাধ্যমে পরবর্তী স্তরে উত্তীর্ণ করার দাবি জানান তারা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক মাস আগে আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা হয়নি। বর্তমানে পরীক্ষা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি বা প্রস্তুতি কোনোটাই নেই। কলেজের পক্ষ থেকে অনলাইন ক্লাস নেওয়া হলেও সেটি পর্যাপ্ত না। এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়া হলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। তাই পরীক্ষা বাতিল করে ভিন্ন পন্থায় মূল্যায়নের মাধ্যমে সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, দেশের যে পরিস্থিতি তাতে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে, এর মধ্যে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সন্তানরা পড়ালেখা থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। যেহেতু কলেজ বন্ধ রেখে দীর্ঘদিন ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি, সে কারণে হঠাৎ করে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়বে। শিক্ষাজীবনে তাদের বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এজন্য বিকল্প কিছু ভাবা উচিত।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দীন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এক দুই সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া যাবে। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে সেটা ভিন্ন কথা। তবে এ স্তরের শিক্ষায় স্বয়ংক্রিয় পাস দেওয়া ঠিক হবে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা মার্চেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বেশিরভাগ বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হলেও করোনা কারণে দুই থেকে পাঁচটি বিষয়ের পরীক্ষা আটকে যায়।

এরপর কেটে গেছে ৯ থেকে ১০ মাস। এ অবস্থায় অনেকের মধ্যেই উৎকণ্ঠা আর হতাশা দানা বাঁধছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, চতুর্থ বর্ষ শেষ না হলে সনদ দেওয়া হবে না। আর সনদ না মিললে চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করা হবে না। এদিকে স্বয়ংক্রিয় পাসের দাবিতে সম্প্রতি গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে অটো পাস দিতে বিভিন্ন কলেজের বিএ (সম্মান) ও চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীরা দাবি জানান।

জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাস কোর্স, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষ, মাস্টার্স ফাইনাল এপ্রিলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে এসব পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়। ডিগ্রি পাস কোর্সে প্রতিটি বর্ষে ৩৪টি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয় পাসের বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বিষয়টি এখনো ভাবা হচ্ছে না। আমরা অপেক্ষা করছি। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় এনে এ মুহূর্তে ফেস টু ফেস পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads