• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯
মৃত ও হজে থাকা ব্যক্তিরাও নাশকতা মামলায়

নাশকতার মামলা

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

মৃত ও হজে থাকা ব্যক্তিরাও নাশকতা মামলায়

  • কুষ্টিয়া (সদর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কুষ্টিয়ায় গত ২৫ দিনে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নামে ২৮টি নাশকতার মামলা করেছে পুলিশ। জেলার সাত থানায় দায়ের করা এসব মামলায় আসামি হয়েছে বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

এসব মামলায় সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে আসামির তালিকায় রয়েছে একাধিক মৃত ব্যক্তির নাম। এমনকি বিদেশে চিকিৎসাধীন ও হজে থেকেও আসামি হয়েছেন একাধিক বিএনপি নেতা। বেশ আগে থেকে জেলে থাকা দুই বিএনপিকর্মীকেও আসামি করেছে পুলিশ। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাবি, নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন দমন করতেই নেতাকর্মীদের নামে কাল্পনিক মামলা দিয়ে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। যাতে তারা মাঠে নামতে ভয় পায়। তবে পুলিশের দাবি, নাশকতার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের আটক করা হচ্ছে।

মামলার তথ্য বলছে, গত ৩১ আগস্ট ভেড়ামারা থানায় করা নাশকতা মামলায় আসামি উপজেলা পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম। মামলা নম্বর ০১। ওই সময় হজ পালনে তিনি সৌদি আরব ছিলেন। কুমারখালী উপজেলার ভাড়রা গ্রামের বাটুন শেখের ছেলে কায়েম শেখ ২০০৬ সালে মারা যান। কিন্তু কুমারখালী থানায় ২১ সেপ্টেম্বর নাশকতার মামলার ৪১ নম্বর আসামি হয়েছেন মৃত কায়েম শেখ। একইভাবে আসামি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরব আলী। ৬ মাস আগে তিনি মারা যান। গত ২২ সেপ্টেম্বর ইবি থানার মামলায় ৩ নম্বর আসামি হয়েছেন তিনি। কুমারখালী উপজেলা কৃষক দলের

সদস্য সচিব প্রফেসর হারুন-অর-রশিদ। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে প্রায় দেড় মাস আগে গেছেন ভারতের ভেলোরে। বর্তমানে সেখানেই আছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর কুমারখালী থানায় নাশকতার মামলায় আসামি করা হয় তাকে।

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম রেজা। ভারতে জটিল অপারেশন শেষে সেখানেই চিকিৎসাধীন। ২০ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানার নাশকতা মামলায় আসামি করা হয় তাকে। দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির দুই কর্মী শিপন ও জাপান জেলে। তারাও নাশকতা মামলার আসামি। এ ছাড়া বিএনপিকর্মী ইয়াকুব আলী দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায়। তার নামেও মামলা দিয়েছে পুলিশ ।

গত ৩১ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলার ৭ থানায় নাশকতার ২৯টি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে খোকসা-কুমারখালী থানায় ৯ মামলা হয়েছে। আসামি ৪২৮ নেতাকর্মী। এদের ৬২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়া মডেল ও ইবি থানায় হয়েছে ১০ মামলা। এই দুই থানায় মামলার আসামি ৩৬২ নেতাকর্মী। আটক ৯৫ জন। দৌলতপুরে হয়েছে ৫ নাশকতা মামলা। আসামি ২০০, আটক ২৮। মিরপুর-ভেড়ামারায় ৫ মামলায় আসামি ১৬৫। পুলিশ ১৭ জনকে আটক করেছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী বলেন, কাল্পনিক এসব মামলার এজাহার অনেকটা একই রকম। শুধু মামলায় আসামির নাম ও স্থান আলাদা।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন বলেন, জেলাজুড়ে গণগ্রেফতার চলছে। মামলার পর মামলা দিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে আসামি করা হচ্ছে। প্রতি রাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। এভাবে মামলা ও গণগ্রেফতার করে বিএনপিকে দমানো যাবে না।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, নাশকতার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছিল। তাদের স্বীকারোক্তিতে এজাহারে অনেকের নাম এসেছে। তবে যদি মৃত বা দেশে নেই এমন কোনো ব্যক্তির নাম এজাহারে থাকে তাহলে তদন্তে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads