• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
গুরুদাসপুরে জিংফসফাইড বিষ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইঁদুর মারা ট্যাবলেট

গুড়রুদাসপুর (নাটোর) : গুরুদাসপুরে আলুর সাথে ময়দা আর জিংফসফাইড বিষ মিশিয়ে তৈরি করা ইদুর মারা ট্যাবলেট এভাবেই বিক্রয় করছে। ছবিটি আজ উপজেলার নাজিরপুর হাট থেকে তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

গুরুদাসপুরে জিংফসফাইড বিষ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইঁদুর মারা ট্যাবলেট

  • গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ অক্টোবর ২০১৮

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে জিংফসফাইড বিষ দিয়ে আলু আর ময়দার সাথে মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে- ইঁদুর মারা ট্যাবলেট। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে হাটে আসা গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছে। মানুষ দেদারছে কিনে নিয়ে যাচ্ছে এই বিষ মিশানো ইঁদুর মারা ট্যাবলেট। কিন্তু এর ভয়ানক ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন নয় ক্রেতা-বিক্রেতারা।

অনুমোদনহীন, অপেশাদার কিছু মানুষ জীবিকা হিসেবে ভয়ানক এই পেশা বেছে নিয়েছে। শুধু যে আলু ময়দায় এটা তৈরি হচ্ছে তা নয়, গম ও শুটকি মাছের সাথে বিষ মিশিয়েও তৈরি হচ্ছে এই ইঁদুর মারা ওষুধ। গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় হাট,নাজিরপুরহাট,কাছিকাটাহাটসহ পাশের বড়াইগ্রাম উপজেলার মৌখাড়া, লক্ষীকোল ও সিংড়ার বিলদহরহাটে মজমা বসিয়ে এবং বাইসাইকেলে বিশেষ কায়দায় ঝুড়ি বসিয়ে হাত মাইকে ফলাও করে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক চিৎিসক রবিউল করিম শান্ত জানান,- জিংফসফাইড কালো রংয়ের পাউডার। এটা খাওয়ার পর শুধু ইঁদুর নয়- মানুষ,পশুপাখি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। পক্ষন্তরে ইুঁদুর মারার জন্য ক্লোরেট, ব্রোমা পয়েন্ট, ল্যানিরেট, রেটক্লিলার অপেক্ষাকৃত সহনীয়মাত্রা রয়েছে। তাছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে এসব ওষুধ খালিহাতে তৈরি ও ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ। তাৎক্ষণিক এর বিরুপ প্রভাব পরিলক্ষিত না হলেও, ধীরেধীরে ক্ষতিকর প্রভাব শরীরে পড়ে।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে,- কৃষক জমির ফসল, গাছের ফল-মূল,বাসা বাড়ির সম্পদ রক্ষার জন্য অনুমোদিত কোম্পানীর ওষুধ কিনে ইঁদুর নিধনের চেষ্টা করেন। এসব কোম্পানীগুলো কম মাত্রার ক্লোরেট, ব্রোমা পয়েন্ট, ল্যানিরেট, রেটক্লিলার ওষুধ ব্যবহার করে থাকে। এসব ওষুধের সাথে ভাত, চালের গুঁড়া, গম ও শুটকি মাছ ও আলুতে মিশিয়ে প্রয়োগ করে থাকেন কৃষক। খাওয়ার দুই দিনের মধ্যে মারা যায় ইঁদুর।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার নাজিরপুর হাটে গিয়ে দেখাগেছে, আলুর সাথে ময়দা ও জিংফসফাইড নামে উচ্চ মাত্রার কীটনাশক বিষ মিশিয়ে তৈরি করা ইঁদুর নাশক বড়ি বিক্রি হচ্ছে। ওই ইঁদুরনাশক তৈরি করার সময় হাতে কোন রকম গ্লোব ব্যবহার করা হচ্ছেনা। খালি হাতেই কাগজে কিংবা পলিথিনে ভরে বিক্রি করা হচ্ছে-চাটাই বিছিয়ে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ কিনছে দল বেঁধে।

কথাবলে জানাগেলে, ওই বিক্রেতার নাম সাদেক আলী (৩০)। নাটোর সদর থানার হালসা গ্রামে তাঁর বাড়ি। ১০ বছর ধরে তিনি এপন্থায় ওষুধ তৈরি করে নাজিরপুর, লক্ষীকোল, মৌখাড়া হাটে বিক্রি করেন। এটাই তার জীবিকা। ১০টাকায় ২০টি ইঁদুর মারার বড়ি বিক্রি হয়। তবে গম বা শুটকি মাছের ওষুধের দাম অনেক বেশি। প্রতিদিন-১৫০-২০০জনের কাছে তিনি বিক্রি করেন। ওই বিক্রেতার ভাষ্যমতে, তাঁর মত কমপক্ষে ১০জন ইঁদুরের ওষুধ হাতে তৈরি করে বিভিন্ন হাটে-বাজারে বিক্রি করেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন,- অনুমোদন ছাড়া খোলা বাজারে এধরনের বিষযুক্ত ওষুধ বিক্রি করার বিধান নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন। অনুমোদিত কোম্পানীর বিষ কিনে ইঁদুর নিধনের পরামর্শ দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads