• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো মেয়েটির দায়িত্ব নিলেন : মেজর রফিক

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও ভাই হারানো মেয়েটির দায়িত্ব নিয়েছেন হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের ১নং সক্টের কমান্ডার মেজর অব. রফিকুল ইমলাম বীরউত্তম।

ছবি - বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো মেয়েটির দায়িত্ব নিলেন : মেজর রফিক

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ অক্টোবর ২০১৮

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের গোঘড়ায় গত সোমবার (২২ অক্টোবর) ভোর রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ভাই হারানো শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের উয়ারুক গ্রামের বাসিন্দা নুহা আক্তারের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাবিব উল্লাহ মারুফ নুহার বাড়িতে যেয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নুহা আক্তার এবার উয়ারুক রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গ্রহণ করবে।

সোমবার (২২ অক্টেবর) ভোররাতে কুমিল্লা-চাঁদপুর মহাসড়কের বাকিলা এলাকায় কাভার্ড ভ্যানের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় থাকা নুহার বাবা এলেম হোসেন (৪৮) ও ভাই একরাম হোসেনসহ (২৫) তিনজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এলেম হোসেন ও একরাম হোসেন ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁদের হারিয়ে পরিবারটির এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে। পরিবারে পুরুষ সদস্য বলতে কেউ রইল না। এমন সংবাদ পেয়েই মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এ মহত কাজটি করেন।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলেম হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম, দুই মেয়ে সোনিয়া ও নুহা আক্তার এবং ছেলের বউ মিলে পরিবারের সদস্য সংখ্যা এখন চারজন। এলেম হোসেন গাছ কাটার শ্রমিক ছিলেন। ছেলে একরাম হোসেন তিন মাস আগে শূণ্য হাতে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন। পরিবারটি দুইটি এনজিওর কাছে ঋনগ্রস্থ আছে।

এলেম হোসেনে স্ত্রী শাহনাজ বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলাদেশের খবর’কে বলেন, চাঁদপুরে টিকেট কেটে বড়শি বাওয়ার জন্য বাবা ছেলে সোমবার ভোররাতে বাড়ি থেকে বের হয়। বড়শি বাওয়ার মাছ বেছে পরিবারের বাজার আনার কথা ছিল। স্বামীসন্তান একসাথে চলে যাওয়ায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির অত্যাচারে সেখানে থাকতে পারে না। সে আমাদের বাড়িতে থাকে। ছোট মেয়ে নুহা আক্তার এবার উয়ারুক রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। সামনে মেয়ের আর লেখাপড়া হবে না বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিবারটির এখন উপার্জনক্ষম কোন ব্যক্তি নেই। ঘর ভিটি ছাড়া মাঠে কোন জায়গা সম্পত্তি নেই। সরকার ও বৃত্তবানদের পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো উচিত। না হলে তারা না খেয়ে মরবে। ছোট মেয়েটির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এলাকাবাসী জানায়, ছেলেকে ধারদেনা করে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে শূণ্য হাতে ফিরে এসেছে। ধারদেনা রয়ে গেছে।

গতকাল মঙলবার সকাল বেলায় ইউএনও হাবিব উল্লাহ মারুফ নুহার বাড়িতে যেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাদের পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা অনুদান দেন। ইউএনও বলেন, পরিবারটি একবারই অসহায় হয়ে পড়েছে। তাঁদেরকে সরকারি খরচে একটি ঘর করে দেওয়া হবে, বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এমপি স্যার ছোট মেয়ে নুহার পড়ালেখার খরচ চালানো দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি সবসময় এ পরিবারটির পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, অসহায় পরিবারটিকে তিনি সরকারের সব সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads