• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
রাণীনগরে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

রাণীনগরে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ

  • রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ জুলাই ২০১৯

নওগাঁর রাণীনগরে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সিঙ্গাহার গ্রামের রাস্তার প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার আনুমানিক প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৩শ’ টি ইউক্লিপটাসের গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। গাছগুলো কেটে ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে গেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী ঠিকাদারের লোকজন। এই অভিযুক্ত ঠিকাদার বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ী এলাকার মেসার্স নজরুল ইসলাম ’স’ মিল এন্ড কাঠঘর প্রো: মো: মফিজুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সুষ্ঠ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, বগুড়ার সামাজিক বন বিভাগ থেকে আদমদিঘী উপজেলার বন্তইর এলাকার কিছু গাছ গত ২৯-০২-২০১৬ তারিখে টেন্ডার বিক্রির আহবান করে। ওই গাছগুলো বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ী এলাকার মেসার্স নজরুল ইসলাম ’স’ মিল এন্ড কাঠঘর প্রো: মো: মফিজুল ইসলাম টেন্ডারের গাছ পান। টেন্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে, আদমদিঘী উপজেলার বন্তইর হইতে রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তার গাছ টেন্ডার দেওয়া হয় এর মধ্যে রাণীনগর উপজেলার সিমানার মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার গাছ পরেছে।

ওই গাছগুলো টাকার পাশাপাশি ঠিকাদার মফিজুল ইসলাম স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় রাণীনগর উপজেলার আবাদুপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সিঙ্গাহার গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৩শ’টি ইউক্লিপটাসের গাছ কাটেন তারা। স্থানীয়রা রাণীনগর উপজেলা অংশের গাছ কাটতে বাঁধা দিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাছগুলো কেটে ট্র্যাক বোঝায় করে নিয়ে চলে যান। এছাড়াও কর্তনকৃত কিছু গাছ সেখানে পরে আছে। স্থানীয় লোকজন এমনি প্রশ্ন তুলেছেন রাণীনগর উপজেলার সিমানার গাছ কিভাবে বগুড়া সামাজিক বন বিভাগ টেন্ডার দিতে পারে ও ঠিকাদার কিভাবে রাণীনগরের সিমানার গাছ কেটে নিয়ে যেতে পারে।

গাছ কর্তনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আবাদপুকুর এলাকার অনেকেই জানান, অনেক দিন আগে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাশ থেকে আদমদিঘী উপজেলা সীমান্ত এলাকায় গাছ গুলো লাগানো হয়। গাছগুলো বেশ মোটা হয়েছে। গত ২-৩ দিন আগে থেকে রাণীনগর উপজেলার অংশের গাছগুলো কাটা শুরু করেন ঠিকাদারের লোকজন। টেন্ডারে অনুযায়ী পূর্বে আদমদিঘী উপজেলার অংশের গাছ কাটা শেষ হলেও রাণীনগর উপজেলার মধ্যে থাকা প্রায় ৩শ’টি ইউক্লিপটাস গাছগুলো এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় কাটেন তারা। এ সময় অনেকেই বাধা দিলে তাদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখান হয়।

স্থানীয়রা আরো জানান, গাছের দাম আনুমানিক ৫ হাজার ১০ হাজার হইতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে। এ ঘটনায় রাণীনগর উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। গাছ কাটার ঘটনায় সুষ্ট তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মুঠোফোনে বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে আমি প্রথমে জানতে পারিনি পরে বিষযটি জানতে পারি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মফিজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, এটা আমার কাছে থেকে না জেনে বগুড়া বন বিভাগ থেকে জানেন।

এ ব্যাপারে বগুড়া সামাজিক বন বিভাগের প্রধান সহকারী কায়রুন নাহার মুঠোফোনে বলেন, ওইটা টেন্ডার দেওয়া হয়েছিলো। এ বিষয়ে মাঝখানে একটু ঝামেলা হয়েছিলো সেটা ঠিক হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে এ ব্যাপারে নওগাঁ বন বিভাগ কর্মকর্তা মেহেদী জামান জানান, রাণীনগর উপজেলায় আমাদের যে দায়িত্বে আছেন তাকে আমি এ বিষয়ে সব বলেছি সে আমাকে তথ্য দিলে আপনাকে জানাবো। এছাড়াও তার কাছে রাণীনগর উপজেলার গাছ বগুড়া সামাজিক বন বিভাগ টেন্ডার দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, আমার রাণীনগর কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের সাথে কথা বলতে বলে বিষয়টি এরিয়ে যান তিনি।

রাণীনগর উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বন বিভাগের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করে আদমদিঘী কর্মকর্তার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর লোক পাঠিয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads