• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
করোনা আতঙ্ক: ৩ ঘণ্টা ধরে সেন্টমার্টিনের রাস্তায় মাঝির লাশ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

করোনা আতঙ্ক: ৩ ঘণ্টা ধরে সেন্টমার্টিনের রাস্তায় মাঝির লাশ

  • টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ এপ্রিল ২০২০

করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ৩ ঘণ্টা ধরে রাস্তায় পড়ে থাকে সেলিম মাঝির লাশ। ঘটনাটি ঘটেছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। হাসপাতালে যাওয়ার সময় রাস্তায় ঢলে পড়ে মারা যায় মো. সেলিম (৫০)। সকাল সাড়ে ৮টা হতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকে তার লাশ। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সে স্থানীয় পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা। করোনা পজিটিভ সন্দেহে এভাবে রাস্তায় পড়ে থাকে তার দেহ । কেউ কাছে যাওয়ার সাহস করেনি। গোটা দ্বীপের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেন্টামার্টিন্স পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ (পরিদর্শক) ফজলুল হক, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানসহ কোস্ট গার্ড, স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার ও দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন।

জানা যায়, সেন্টমার্টিন পশ্চিমপাড়ার মো. হারুন উর রশিদের মালিকানাধীন ফিশিং বোটের মাঝি মৃত মো. সেলিম। দীর্ঘবছর ধরে তার ফিশিং ট্রলারে মাছ ধরার কাজ করেন সেলিম। সে মাঝে মধ্যে সে অসুস্থ হয়ে যেতো। তখন নৌকা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতেও যেতে পারতো না। দীর্ঘদিন ধরে সে অসুস্থতায় ভুগছে বলে জানান বোট মালিক হারুন ।

পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেলিম অনেক দিন ধরে অসুস্থ। প্রায় সময় ডাক্তার দেখাতে টেকনাফ যাওয়া হত। কয়েকদিন আগে তার খাবার ওষুধ শেষ হয়ে যায় । স্থানীায়ভাবে ডাক্তার দেখাতে সেন্টমার্টিন পশ্চিমপাড়া নিজ বাড়ি থেকে সেলিম সকাল ৮টায় বের হয়। কিছুক্ষণ পর খবর পাওয়া যায় জিনজিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্বপাশে রাস্তায় ঢলে পড়ে সে ঘটনাস্থলে গেছে ।

এদিকে প্রায় ৩ ঘন্টা পর্যন্ত সেলিমের মৃতদেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে করোনা পজিটিভ সন্দেহে। প্রথমে করোনা আক্রান্ত রোগী সন্দেহে কেউ এগিয়ে না গেলেও পরে অন্যান্য রোগের বিষয়টি জানতে পায় তারা। তখন স্থানীয়দের ধারনা পাল্টে যায়। লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করে। দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে সেন্টমার্টিন্স সাগর পাড়ে করোনা রোগীর মতই জানাজা সম্পন্ন করা হয়।

এ প্রসংগে টেকনাফ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: টিটু চন্দ্র শীল জানান, সেন্টমাটিন্সে মৃত মো: সেলিমের দাফন প্রক্রিয়াটি করোনা রোগীর মত সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব কাজে যারা জড়িত থাকবে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। নিহত সেলিমের স্ত্রীসহ তাদের আশপাশের বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে। মৃত সেলিমের স্ত্রী-সন্তানদের নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হবে আসলে মৃত ব্যাক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলো কি না।
মো. সেলিমের বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রী, ১ মেয়ে, ১ ছেলে রয়েছে।

এদিকে দিকে সেন্টর্মাটিন্সে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল রয়েছে। তবে এখানে নেই কোনো চিকিৎসক। দুয়েকজন স্বাস্থ্যসহকারী থাকে। এর ফলে গোটা দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার অধিবাসী স্বাস্থ্য ঝুকিঁর মধ্যেই রয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads