• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
করোনায় সম্মুখ যোদ্ধা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের খবর রাখে না কেউ

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

করোনায় সম্মুখ যোদ্ধা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের খবর রাখে না কেউ

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ০৯ মে ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সব কিছুতে এখন স্থবিরতা।  মানুষকে ঘরে রাখার জন্য যখন সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে আর তখন করোনা যুদ্ধে সম্মুখ সমরে কাজ করছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। করোনা রোগীর কাছ থেকে স্বশরীরে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে সেটা ল্যাবে পরীক্ষা এবং রিপোর্ট তৈরি করে কর্মকর্তাদের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছানোর পেছনে থেকে যে মানুষগুলো অবদান রাখছে কেউ খবর রাখছে না সে সব বীরদের। কোনো সময় খবরেও আসে না  এমনকি টিভিতে নিজের চেহারা দেখানো সুযোগও নেই তাদের। বরং মাঝে মধ্যে সামান্য পান থেকে চুন খসলেই পড়তে হয় নানা আইনী জটিলতায় আর শুনতে হয় কর্মকর্তাদের বকুনি। তবে সাধরাণ মানুষের মতে করোনার এই দুঃসময়ে মেডিকেল, ইপিআই টেকনোলজিস্ট এবং স্বাস্থ্য বিভাগের দাপ্তরিক কাজে যারা জড়িত তারাই সব চেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুরো কক্সবাজারে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আছে ৮ জন, ইপিআই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আছে ৯ জন।  এছাড়া কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আছে ৪ জন। তারাই মূলত করোনা রোগী থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। পরে সেগুলো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পরীক্ষা করে নির্ধারণ করা হয় কারো শরীরে করোনা ভাইরাস আছে কি না। আর ল্যাবে ও কাজ করে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা সঙ্গে অবশ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা থাকে।

এ ব্যপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা হচ্ছে বর্তমান সময়ের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ন অংশ। তারাই করোনা রোগী থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যন্ত সব কিছু করছেন। এছাড়া দপ্তরিক কাজের সাথে জড়িতরাও অগ্রভাবের সৈনিক বলা যাবে। আমি এমনও দেখেছি রোজা রেখে অনেকে যথা সময়ে ইফতার করতে পারে না। বাড়িতে ফিরছে মাঝরাতে ঠিকমত সেহেরি খেতে পারছেনা। তারপরও তারা নিষ্ঠার সঙ্গে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে। সে জন্য আমি ব্যাক্তিগত এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বলেন, যখন থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তখন থেকে আমাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছি রাষ্ট্রের কাজে। ইতোমধ্যে মহেশখালীতে আমাদের ২ জন সহকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তারা রোগী থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন বলে সবার ধারনা। এতে আমাদের পরিবার পরিজন চরম ঝুঁকির মধ্যে আছে। বর্তমানে ল্যাবে এবং মাঠে কাজ করতে গিয়ে আমাদের খাওয়া দাওয়ার সময়ও পায় না। আবার বাড়ি ফিরেও ঠিকমত ছেলেমেয়েদের সাথে সময় কাটাতে ভয় লাগে কারণ সব সময় করোনার সাথে থাকি সে জন্য। যদিও অনেক ধরনের প্রটেকশন ব্যবহার করি তার পরও খুব ভয় লাগে। এর পর ও আমাদের সামান্য ভুল বা অন্যকোন সমস্য হলে পোহাতে হয় নানান ধরনের ঝামেলা।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, একজন ডাক্তার তখনই চিকিৎসা দিতে পারে যখন তার হাতে রোগীর সঠিক তথ্য থাকে। আর রোগের সঠিক তথ্য তুলে আনে মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সহযোগিরা। বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে তারা খুবই আন্তরিকভাবে দেশের জন্য কাজ করছে বলেই এখনো পর্যন্ত সব কিছু নিয়ম মাফিক চলছে তাই আমি তাদের অভিবাধন জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads