নেত্রকোনার কলমাকান্দা সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন কোকিলের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ ও প্রতিকার দাবি করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত পাঠ করেন, সহকারি শিক্ষক এইচ, এম ইলিয়াস। এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাসসহ ২৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে তারা বলেন, বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয়করণ হয়। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শিক্ষক-কর্মচারীদের পদ সৃজনের তথ্য চেয়ে পত্র পাঠালেও ইলিয়াস হোসেন কোকিল তার নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতি থাকায় তা গোপন করে রাখেন। এ কারণে অদ্যাবধি শিক্ষক-কর্মচারীদের পদ জাতীয়করণ হয়নি এবং তারা সরকারী বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে বিশেষ ক্লাসের নামে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনারশিদে ৩শ টাকা করে আদায়, বিধি বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত মোবাইল বিল উত্তোলন, অপ্রয়োজনীয়ভাবে ঘর মেরামতের নাম করে টাকা উত্তোলন, প্রশ্নপত্র কেনার নামে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, তিন-চারগুন বেশি আপ্যাায়ন খরচ উত্তোলন, ভর্তি পরীক্ষার টাকা বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যয়, বেআইনীভাবে গাছ কাটা এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন ছাড়া বিল-ভাউচার তৈরি, অসদাচরণসহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে গত ১৫ সেপ্টেম্বরে প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হােসেন কােকিলের কর্তৃক শিক্ষকদের জড়িয়ে মিডিয়ায় প্রচারিত তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উনার অসত্য বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আল্টিমেটাম প্রদান করা হয় নতুবা শিক্ষক/কর্মচারীবৃন্দ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি চন্দন বিশ্বাস বলেন, ইলিয়াস হোসেন কোকিল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রধান শিক্ষকের পদে থেকেও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন- যা বিধিবহির্ভূত। তার অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য ইতিপূর্বে শিক্ষক, কর্মচারী এবং অভিভাবকরা মানববন্ধনও করেছেন।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন কোকিলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। তবে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগটির তদন্ত করা হয়েছে।
