• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

সবজি বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের হাসি

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ নভেম্বর ২০২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নানা প্রকার সবজি। স্থানীয় কৃষকরা তাদের পতিত জমিতে লাউ ,শিম, লালশাখ, শসা, বরবটি, করলা, বেগুনসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করছেন। বর্তমানে স্থানীয় হাট বাজারে লাউ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিচ ৪৫-৫০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ৬৫-৭০ টাকা শিম ১১০-১২০, বেগুন ৬০-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে এসেছে । অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্যার কারণেই এ সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। কয়েক দফায় বৃষ্টিপাতে সবজি চাষের কিছু ক্ষতি হলে বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় ভাগ্য ফিরছে তাদের। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল এখানকার সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

সরেজমিনে পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার কালিনগর, সাতপাড়া, হীরাপুর, বাউতলা, উমেদপুর আজমপুর, চানপুসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এসব এলাকার বেশী ভাগ কৃষক মৌসুম বেধে বার মাসই সবজি আবাদ করছেন। কেউ নিজেদের পতিত জমিতে, কেউ বাড়ির আঙ্গিনায় আবার কেউ করছেন বাড়ির ছাদে। বেশী ভাগ লোকজনই কৃষি অফিসের পরামর্শে এ চাষ করছেন।

পৌর শহরের তারাগন এলাকায় সবজি চাষ করেন কৃষক মো. আমজাত খান প্রায় ৬০ শতক জায়গা ১২ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা নিয়ে লাউ, করলা, শসাসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করেন। এ চাষে জমি, মাচা তৈরী চারাসহ অন্যান্য খরচ হয় তার প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কয়েক দফা বৃষ্টিতে সবজি ক্ষতি হলেও এরপর ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন প্রতিপিচ লাউ ৪০টাকা থেকে শুরু করে এখন ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলা ৬০ টাকা থেকে বর্তমানে ৭০ টাকা বিক্রি করছেন। তিনি স্থানীয় বাজারে দৈনিক ৩-৪ হাজার টাকার উপর সবজি বিক্রি করছেন। কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এই জমি থেকে ৩ লাখ টাকার উপর সবজি বিক্রি করতে পারবেন বলে জানায়।

উপজেলার চানপুর এলাকার হাবিব মিয়া বলেন, ২৫ শতক জায়গায় তিনি লাউ, বেগুন লাল শাখ চাষ করেছেন। কয়েক দফা বৃষ্টিতে তার ফলন নষ্ট হলে ও তিনি হাল ছাড়েননি। তার এ চাষে প্রায় ১০ হাজার টাকার উপর খরচ হয়। এ পযর্ন্ত তিনি ১৮ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন বলে জানায়। বর্তমান বাজারে সবজির ভালো দাম থাকায় তিনি আশা করছেন নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ও খরচ বাদে ৮০ হাজার টাকার উপর তার আয় হবে।

কৃষক মো. ফরিদ মিয়া বলেন, কোন প্রকার কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে লাউ, করলা, লাল শাক করা হয়েছে। জমি তৈরী করে বীজ লাগানোর এক সপ্তাহরে মধ্যেই চারা গঁজিয়ে উঠে। এরপর পরিচর্যা, পানি, সার ও মাচা তৈরীসহ অন্যান্য কাজ করা হয়। গত ১০দিন ধরে চলছে ওই সব সবজি বিক্রি। দেশীয় পদ্ধতিতে চাষ করায় আশা করছি নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ভালো টাকা আয় হবে।

লিয়াকত হোসেন বলেন ৩০ শতক জমিতে লাল শাখ, লাউ, করলা, শিম, আবাদ করা হয়। এতে খরচ হয়েছে তার ৮ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ১৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন বাজার-দর ভালো থাকলে এ মৌসুমে খরচ বাদে ৬০-৭০ হাজার টাকার উপর তার আয় হবে। তিনি বলেন এ জমিতে যদি ধান আবাদ করা হতো তাহলে ৫ হাজার টাকার উপর ধান পাওয়া যেতো না। তাই তিনি গত ৩ বছর ধরে নানা প্রকার সবজি আবাদ করা হয়। শুধু আমজাদ, ফরিদ, হাবিবই নয় শতাধিক কৃষক সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বার মাসই নানা প্রকার সবজি আবাদ হচ্ছে। ফলন বৃদ্ধিতে সব সময় স্থানীয় কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় কিছু ক্ষতি হলে ও নিয়মিত পরিচর্যার কারণে সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় বাজারে দাম ভালো থাকায় সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। কম খরচে লাভ বেশী হওয়ায় বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে বভিন্নি ধরনরে সবজি চাষ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads