• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯
রাইস মিলে হাসি ফুটল দুখু-মনিরা দম্পতির

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

রাইস মিলে হাসি ফুটল দুখু-মনিরা দম্পতির

  • আব্দুস সালাম, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)
  • প্রকাশিত ০৬ জানুয়ারি ২০২১

পৌষের ভোরে কনকনে ঠান্ডা পড়ছে। তখনো অনেকে লেপ-কাঁথার মধ্যে শুয়ে আছে। সেই সময় গৃহবধূ মনিরা বেগম বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া রাইস মিলের মধ্যে বসে আছেন। এমন সময় মধ্য বয়স্কা এক গৃহবধূ তার নাম ধরে ডেকে বলল দরজাটা খোল, ডালগুলো তাড়াতাড়ি পিষে দে, কুমড়োর বড়ি দিতে হবে।

মনিরা বেগম দরজা খুলে বেঞ্চে লাগানো ডাল পেষার মেশিনটি বের করে ডাল পিষতে শুরু করলেন। এর মধ্যে ডাল পিষতে হাজির হয়েছে আরো কয়েকজন। তখন সময় সকাল ছয়টা পেরিয়ে গেছে। মেশিনে ভিড় দেখে মনিরার স্বামী দুখু দৌড়ে এসে বউয়ের হাত থেকে ডাল পেষার ধজা কাঠি হাতে নিয়ে কাজে মন দেন। আর মনিরা মুচকি হেসে স্বামীর হাতে ধজা কাঠিটা ধরিয়ে দিয়ে মিলের মধ্যে অন্য কাজে চলে গেল। ডাল পিষার মেশিনের পেছনে রয়েছে তাদের ধান, গম, সরিষা, হলুদ, মরিচ ও আটা কোটার মেশিন। তারা নিজেরাই এই কাজ করে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন তাদের স্বপ্নের রাইস মিল। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেমিশে এ কাজ করে আজ তারা স্বাবলম্বী।

উপজেলা সদরের পুরাতন বাজারপাড়ার আহাম্মদ মণ্ডলের ছেলে দুখু বলেন, ছোটবেলায় পরের রাইস মিলে কাজ করতাম, আর মিল তৈরির স্বপ্ন দেখতাম। লেখাপড়া তেমন জানিনে। সবার সহযোগিতা আর নিজের অল্প পুঁজি নিয়ে প্রথমে ধান ও গম ভাঙানোর হলার নিয়ে কাজ শুরু করি। এরপর বিয়ে করে সংসারী হয়। আমার স্ত্রী মনিরা প্রথম প্রথম আড়াল থেকে আমার কাজের সহযোগিতার হাত বাড়ায়। তারপর আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে এই রাইস মিল থেকে আজ সরিষা, হলুদ, মরিচ, আটা কোটা ও ডাল মেশিনের হপার বসিয়ে কাজ করি।

মনিরা বেগম বলেন, আমার স্বামী অত্যন্ত সহজ সরল এবং কর্মঠ। সংসার চালানো খরচ ও বিদ্যুৎ বিল বাদে বাড়তি কোনো টাকা তিনি খরচ করেন না। সারাদিন যে টাকা আয় হয় তা হিসাবনিকাশ শেষে আমার হাতে তুলে দেন। প্রথম প্রথম এ কাজে স্বামীকে সহযোগিতা করতে খুব লজ্জা লাগত। স্বামীর এ কাজে টুকটাক সহযোগিতা করে তিল তিল করে টাকা জমিয়ে পাকা বাড়ি ও পাকা রাইস মিল করতে পেরেছি। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। নাতিপুতি নিয়ে এই রাইস মিলের ব্যবসা করে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছি। এ যেন খোদার কাছে মোদের পরম পাওয়া।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads