• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি আখাউড়ার ৪৫ পরিবার

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি আখাউড়ার ৪৫ পরিবার

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ জানুয়ারি ২০২১

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে সারা দেশের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৪৫টি পরিবারের হাতে বাড়ির দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা শনিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহ প্রদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর ওইসব উপকারভোগীদের হাতে বাড়ির দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয়।

এ উপলক্ষে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি,সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ  ভূমিহীন পরিবারের লোকজন স্বত:স্ফুর্ত ভাবে অংশ নেন। 

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, জেলা প্রশাসক হায়ত উদ-দৌলা খাঁন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুল রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো, আবুল কাশেম ভূইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরে-এ আলম, পৌরসভা মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, অফিসার ইনচার্জ মো. রসুল আহমদ নিজামী প্রমূখ।

স্বপ্নের ঘর পেয়ে উপকারভোগীরা খুবই খুশি। তাদের ঘরে ঘরে চলছে ঈদ আনন্দ। যে স্বপ্ন তারা পুরণ করতে পারেনি সেই স্বপ্ন পুরণে এগিয়ে এসেছে সরকার। এ জন্য তারা  প্রধানমন্ত্রীর সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। 

বিধবা মাজেদা বেগম বলেন, তার ১ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে।  মানুষের কাছে হাত পেতে যা পাওয়া যেতো তাই দিয়ে তার জীবন চালাতে হতো। থাকার মতো কোন ঘর ছিল না। অন্যের বাড়িতে ভাঙ্গাচুরা ঘরে থাকতে হতো। বর্ষাকালে ঘরে পানি পড়তো। আর শীতকালে হিমেল হাওয়ায় ঘরে ঘুমাতে পারতাম না। জীবনের শেষ বয়সে এসে তিনি পাকা ঘরে থাকতে পারবে কখনো কল্পনাও করেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বপ্ন পুরন করেছে।  তিনি আরো বলেন আমার মাথায় যত চুল আছে আল্লাহ যেন তাকে নেক হায়াত দান করে এবং সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

উপজেলার বনগজ গ্রামের মো. কাদির হোসেনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন  আমরা নিতান্তই অসহায় ভূমিহীন গরিব মানুষ। সামান্য আয়ের সংসার। ভাঙ্গাচুরা ঘরে খেয়ে না খেয়ে কোন রকম দিনানিপাত করছি। শীতের সময় ঘর ভাঙ্গা চুরা থাকায় রাতে খুবই শীত করে। তাছাড়া বৃষ্টির সময় সামান্য বৃষ্টিতেই টিনের ছিদ্র দিয়ে ঘরে বৃষ্টি  পড়ায় খুবই কষ্ট করতে হয়। আমরা কী কখননো আয় রোজগার করে বাড়িঘর করতে পারতাম। তাছাড়া কোনোদিন স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে একটা পাকা ঘর দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলে সে কথা রাখে। কথা অনুযায়ী তিনি   গরিবদের দিকে তাকিয়েছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুক। তিনি যেন অনেক দিন বেঁচে থাকেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ পেয়ে মুখে হাসির ঝিলিক নিয়ে রোকেয়া বেগম এভাবেই তার অনুভূতি প্রকাশ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরে-এ আলমের সার্বিক তত্বাবধানে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের  চর নারায়নপুর মৌজায় সরকারি খাস জমিতে ৪৫টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ  করা হয়।

প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য থাকছে দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এসব ঘর।  চৌচালা বিশিষ্ট  রঙিন টিনের ঘর , প্লেন শিটের জানালা, ও দরজা, ইটের দেয়াল,এবং পাকা মেজ রয়েছে। দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই নকশায়  করা হচ্ছে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেট, টিউবওয়েল, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সুবিধা থাকছে এসব বাড়িতে।

ইউএনও’র সার্বিক তত্বাবধানের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ভূইয়া, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী, মোগড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা দফায় দফায় গৃহ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনসহ নিয়মিত খোঁজ খবর  রাখেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরে-এ আলম  বলেন, এ উপজেলার মোট ৬৫১টি ভূমিহীনদের তালিকা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ৪৫ টি পরিবারের মাঝে ভূমি ও ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা শনিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগী ওইসব পরিবারের নিকট গৃহ হস্তান্তরের কার্যক্রম শুভ উদ্ধোধন  করেন। এরপর  আনুষ্ঠানিকভাবে   উপকারভোগীদের হাতে বাড়ির দলিলপত্র হস্তান্তর করা হয় । পর্যায়ক্রমে বাকীঘরগুলো নির্মাণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads