• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
 আওয়ামী লীগ উজ্জীবিত: বিপাকে বিএনপি

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচন

আওয়ামী লীগ উজ্জীবিত: বিপাকে বিএনপি

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

জমে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে এ পৌরসভা নির্বাচন। এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রার্থীদের প্রচারণা। প্রার্থীরা উৎসব মুখর পরিবেশে দিন-রাত সমানভাবে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন । প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ পৌরসভার উন্নয়নে নানা প্রকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন। তবে-এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত একক প্রার্থী উজ্জিবিত থাকলেও দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দুটি গ্রুপ তৈরী হওয়ায় বেশীভাগ নেতাকর্মী পৌর নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা থেকে অনেকেটাই নিজেকে গুছিয়ে রাখায় বিএনপি প্রার্থী রয়েছে অনেকটাই বিপাকে।

তাছাড়া উপজেলা বিএনপির কমিটি না থাকা, বহিরাগত, অপরিচিত, অদক্ষ, অযোগ্য, আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকাহীন লোকজনকে পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে স্থান দেওয়ায় ইতিমধ্যে ১১ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

পাশাপাশি উপজেলা যুবদল, ছাত্রদলে আহবায়ক কমিটি নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করায় ক্ষোভে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যক্রম থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় দলে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ , বিএনপি ও আ:লীগ বিদ্রোহীসহ ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামীলীগের মনোনীত একক প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল, বিএনপির একক প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন আব্দু, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূইয়া ও যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম খান। তবে শফিকুল ইসলাম খান রয়েছেন মাঠে নতুন মুখ।

এদিকে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী তাকজিল খলিফা কাজল আটঘাট বেধে দলীয় নেতাকর্মী সমর্থন নিয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা আর গণসংযোগ অনেকটাই যেন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে এলাকায়। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচার প্রচারণা নিয়মিত ভাবে করে যাওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ও তিনি ব্যাপক সারা পাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বিএনপি প্রার্থী।

পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়- পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান, গাছপালায়। পাড়ার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শহরের অলিগলিতে ভোটারদের চলছে কানাঘুষা। কাকে ভোট দিলে এলাকার কাঙ্খিত উন্নয়ন হবে কাকে সময় সময় কাছে পাওয়া যাবে উন্নয়নের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন।

মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা দল বেঁধে প্রচার প্রচারনায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। তারা অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও রিক্সায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তাছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ জনসহ মোট ৫৫ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তবে প্রার্থীরা সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের মনোনীত একক প্রার্থী তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, দল আমাকে একক প্রার্থী মনোনীত করেছে। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সবাই ঐক্যবোধ হয়ে কাজ করছেন নৌকাকে বিজয়ী করেত। তিনি আরো বলেন বিগত দিনে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার, পাকাকরণ, বক্স কালভার্ট, ড্রেনের উন্নয়ন, অবকাঠামোর উন্নয়ন,বিভিন্ন পয়েন্টের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিকরণসহ পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয় । সেইসাথে এ পৌরসভাকে ৩য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে উন্নীত করেছেন বলে জানায়।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এ নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক সারা পাচ্ছেন বলে জানায়। তিনি শতভাগ আশাবাদী তাকেই জনগণ নির্বাচিত করে আগামী ৫বছর এলাকার উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ করে দিবেন।

বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জয়নাল আবেদীন আব্দু বলেন, এবার জনগন আমাকে নির্বাচিত করবে আশা রাখি। দীর্ঘ বছর এ পৌরসভা লোকজন কাঙ্খিত সেবা পায় নি। উন্নয়নে বঞ্চিত ছিল পৌরবাসী। এবার নির্বাচনে কে কোন দলের সেটা সাধারণ ভোটাররা দেখছে না বরং ব্যক্তিকে সবাই সমর্থন করছেন। আমি আশাবাদি জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
আ:লীগ (বিদ্রোহী) সাবেক মেয়র মো. নূরুল হক ভূইয়া বলেন, আখাউড়া পৌরবাসী এখন আর দলীয় প্রতীক নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই । ব্যাক্তিই হচ্ছে আসল ফ্যাক্ট। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সাধারণ মানুষদেরকে কী সুবিধা দিয়ে ছিলাম কী উন্নয়ন হয়ে ছিল সেটা কেউ ভূলে নাই। মানুষ চাই এলাকার উন্নয়ন। এ নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক সারা পাচ্ছেন বলে জানায়। তিনি শতভাগ আশাবাদী তাকেই জনগণ নির্বাচিত করে এলাকার কাঙ্খিত উন্নয়ন করার সুযোগ করে দিবেন।

আ:লীগ (বিদ্রোহী) যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম খান বলেন,এই প্রথম বার তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। দল থেকে মনোনয়ন চাওয়া হলে মনোনীত করা হয়নি। আমার এলাকার লোকজন ও সাধারণ ভোটারদের কাঙ্খিত আশা পুরণে আমি প্রার্থী হয়। ইতিমধ্যে যোগ্যতা দিয়ে সাধারণ ভোটারদের মনে জায়গা তিনি জায়গা করে নিয়েছেন বলে জানায়। তিনি আশাবাদি জনগন তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।

উল্লেখ্য, ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে এ পৌরসভা নির্বাচন । এ পৌরসভায় মোট ভোটারসংখ্যা ২৮ হাজার ৯১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ২৩১ জন ও নারী ১৪ হাজার ৬৭৯ জন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads